নিশো চমকে দেওয়ার মতো সুবাতাস: আফজাল হোসেন

বিশ্বজুড়ে সিনেমার দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, যা দেশের সাংস্কৃতিক পরিচিতি গড়ে তোলার এক গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে বিবেচিত। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন বলেন, "চলচ্চিত্রের মাধ্যমে একটি দেশের নাম বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মান লাভের সুযোগ সৃষ্টি করে। কিন্তু, যদি আমরা সিনেমা দেখা ও তৈরি করা বন্ধ করে দিই, তবে আমাদের সিনেমার দুনিয়া অন্ধকারে ডুবে যাবে।"

এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘সৌভাগ‍্যের কথা অন্ধকার থেকে সিনেমা আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এবারের ঈদে মুক্তি পেয়েছে চার চারটি সিনেমা। চক্কর, জংলী, দাগী এবং বরবাদ।’

তিনি বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে- ঈদের পর থেকে আজ অবধি যেখানেই যাই এই সিনেমাগুলো নিয়ে চর্চা হতে দেখি। এটা হারানো সাম্রাজ‍্য ফিরে পাওয়ার মতো। ঈদের আনন্দের সাথে বহুকাল পরে আবার সিনেমার আনন্দ যুক্ত হয়েছে। এ যেনো হারিয়ে পাওয়া।’

‘সিনেমা তো এক ধরণের স্বপ্ন রচনা। স্বপ্ন বড় হতে থাকলে মানুষও বড় হবে। তারকা সিনেমার চেহারা বদলে দিতে পারে। সিনেমাও বদলে দিতে পারে তারকাকে। শাকিব খান তার উদাহরণ। এই তারকা প্রথমে নিজের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তারপর ক্রমাগত বদলে দিচ্ছেন তার সিনেমাগুলোকে’- বলছিলেন আফজাল হোসেন।

এরপর যোগ করে এই নন্দিত নির্মাতা ও অভিনেতা বলেন, ‘দেশটায় আরও কয়েকজন সাহসী পরিচালক থাকলে মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম, নিশোরা আমাদের চলচ্চিত্রের মহা আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারতেন। সিনেমার চেহারায় দারুণ পরিবর্তন নিশ্চয়ই আসতে পারতো।’

আফজাল হোসেন প্রশংসা করতে ভোলেননি এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘দাগি’ সিনেমার। সিনেমাটি দেখেছেন জানিয়ে তিনি লিখেছেন বলেন, ‘শিহাব শাহীনকে অতি চমৎকার নির্মাতা হিসাবে জানি, তাই আগ্রহ নিয়ে দাগি দেখতে যাই। নিশোকে নিয়ে বহু মহলে আলোচনা শুনি- সেজন্যেও বন্ধুবান্ধব ঠিক করে দাগি দেখবে। একসাথে গিয়েছিলাম নয়জন। সবাইকে মুগ্ধ করতে পেরেছে দাগি। হল থেকে বেরিয়ে দলেবলে রেস্তোরাঁয় খেতে গেছি, এ পুরো সময়টা দাগি নিয়ে অসংখ‍্য রকমের কথা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে আফজাল হোসেন আরো বলেন, ‘আমার খুব ভালো লেগেছে। আবার আগের মতোই আমাদের দেশে তৈরি একটা সিনেমা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ সবাই হৈহৈ রৈরৈ আলাপ করেছি। শিহাব শাহীন মুগ্ধ করেছে তার নির্মাণের মুন্সীয়ানা দিয়ে। গল্পটা এক বৈচিত্র থেকে আর এক বৈচিত্রে দৌঁড়ায়, থামে না। দৌঁড়াতেই থাকে। কি হবে এরপর, এই কৌতুহল সারাক্ষণ টিকিয়ে রাখতে পারা খুবই কঠিন কিন্তু সহজেই তা পেরেছেন শিহাব শাহীন।’

নিশোর প্রশংসা করে পর্দার এই ছোটকাকু বলেন, ‘নিশো চমকে দেওয়ার মতো সুবাতাস। এত বড় একটা চলচ্চিত্রের ভার কাঁধে নিয়ে দর্শকমনে বিশ্বস্ততা ধরে রেখে দৌঁড়ে চলা মোটেও সহজ কাজ ছিলনা। সিনেমার পর্দাটা অনেক বড়, সেই পর্দা জুড়ে সারাক্ষণ বড় হয়ে জুড়ে যে থাকতে পারে- সেই নায়ক।’

নিজেকে সিনেমা পাগল উল্লেখ করে আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি আমাদেরকালে সিনেমা পাগল ছিলাম। বয়স বেড়েছে কিন্তু একের পর এক ভালো সিনেমা হতে থাকলে যৌবনের আনন্দ আবার ফিরে পেতে পারি, মনে হয়েছে। নতুন নতুন সিনেমা ঘর হোক, মানুষ সিনেমা দেখুক। নানারকম গল্পের চর্চায় মানুষ নিত‍্য নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারুক। এ চাওয়া বাড়াবাড়ি রকমের নয়।’

আরএ/টিএ

Share this news on: