তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতে বক্তব্য দিলেন প্রধান বিচারপতি

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা—বাংলাদেশ ও তুরস্ক উভয় দেশের সাংবিধানিক পথচলার অভিন্ন লক্ষ্য।”

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ইস্তানবুলে তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে তুরস্কের জনগণ এবং তাদের সাংবিধানিক আদালতকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “এই আয়োজন শুধুমাত্র একটি ঐতিহাসিক উপলক্ষ নয়, বরং সাংবিধানিক আদর্শ ও ন্যায়বিচার রক্ষার প্রতিশ্রুতির প্রতীক।”

বক্তব্যে তিনি বলেন, “সাধারণ নাগরিকের জীবনে সংবিধানকে কার্যকর করতে হলে বিচার প্রক্রিয়াকে আরও সহজলভ্য, স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে হবে।”

বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “উচ্চ আদালত স্বপ্রণোদিত রায় ও জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে, যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।”

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “জলবায়ু ন্যায়বিচার, ডিজিটাল অধিকার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আন্তঃদেশীয় বৈষম্য মোকাবেলায় এখন এমন এক ন্যায়বিচার কাঠামো প্রয়োজন, যা নিজস্ব বাস্তবতা ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট দুটোই বিবেচনায় নেবে।”

বিচার বিভাগীয় প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কাঠামোগত সংস্কারের পথে অগ্রসর হচ্ছে।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, তুরস্কের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশকে বিচার বিভাগীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতা আরও দৃঢ় করতে সহায়তা করবে।

প্রধান বিচারপতি তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের আতিথেয়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশ-তুরস্ক বন্ধুত্বকে আরও গভীর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) তিনি ইস্তানবুলে পৌঁছালে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. আমানুল হক তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

এ সফর শেষে প্রধান বিচারপতি ২৮ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবেন। সেখানে আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘Climate Justice and the Constitution: Reflections from the Global South’-এ তিনি প্যানেল বক্তা হিসেবে অংশ নেবেন।

এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কারও উদ্যোগে ইন্টারনেট বন্ধ হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে : আইসিটি সচিব Jul 06, 2025
img
সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করছে যুক্তরাজ্য, বিশাল আর্থিক সহায়তার ঘোষণা Jul 06, 2025
img
কাঁদতে কাঁদতে বিমানবন্দরে পৌঁছলেন নোরা ফতেহি Jul 06, 2025
img
ডিসি-এসপিরা চিপায় পড়ে ভালো ব্যবহার করছেন : হাসনাত Jul 06, 2025
img
আগস্টে ভারত না আসায় বিকল্প প্রতিপক্ষ খুঁজছে বাংলাদেশ Jul 06, 2025
img
আমরা জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব : নাহিদ Jul 06, 2025
১০ মিনিটে বাংলাদেশের আলোচিত সব খবর Jul 06, 2025
img
নেতার পরিবর্তন হয়েছে, নীতির পরিবর্তন হয়নি : শায়েখে চরমোনাই Jul 06, 2025
img
'ধুরন্ধর' সিনেমায় রানভীরের বিপরীতে কে এই সারা অর্জুন? Jul 06, 2025
img
নান্দাইলে বজ্রাঘাতে প্রাণ গেল পিতা-পুত্রের Jul 06, 2025
img
সানগ্লাস পরে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে বিতর্কের জন্ম দিলেন কঙ্গনা Jul 06, 2025
img
‘পাগল তত্ত্ব’ ব্যবহার করে যেভাবে বিশ্বকে বদলানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প Jul 06, 2025
img
বাবার দ্বিতীয় বিয়ে, হেমা মালিনীর দিকে ছুরি নিয়ে তেড়ে যান সানি! Jul 06, 2025
রণবীরের মুখে গোপন বিয়ের গল্প শুনে হতবাক কারিনা Jul 06, 2025
হাসিনার পতনে মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’ পলিসি কাজ করেছে: রনি Jul 06, 2025
img
ইমামরা ঐক্যবদ্ধ নয় বলে মানুষ বিচার পেতে রাজনৈতিক নেতাদের কাছে যায় : মাসুদ সাঈদী Jul 06, 2025
বিএনপিকে ‘সংস্কার বিরোধী’ বলার প্রচার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: মির্জা ফখরুল Jul 06, 2025
img
বিয়ের পোশাকে নেটিজেনদের নজর কাড়লেন পিয়া বিপাশা Jul 06, 2025
বিএনপিতে শুরু শুদ্ধি অভিযান, টার্গেট হচ্ছে কারা? Jul 06, 2025
ঢাকা জেলা আ.লীগের কার্যালয় গ্যারেজ বানিয়েছে দারাজ; চলছে গাড়ি সার্ভিসিং Jul 06, 2025