বাঙালি সাধারণত পুরনো কিছুকে আঁকড়ে বাঁচতে ভালোবাসে—সাহিত্য হোক বা সিনেমা। এই নস্টালজিয়ার বুনিয়াদেই পরিচালক-চিত্রনাট্যকার জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গল্পকার সৌমিত দেব এক নতুন কনসেপ্ট হাজির করেছেন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম 'ক্লিক'-এ।
বাঙালির অতি প্রিয় গোয়েন্দা প্রদোষ মিত্র ওরফে ফেলুদাকে নতুন রূপে তুলে ধরা হয়েছে ‘চারুলতা মিত্র’ রূপে।
পুরুষ গোয়েন্দার জায়গায় এবার নারী গোয়েন্দা। রজনী সেন রোড নয়, এবার ঠিকানা নিশীথ সেন রোড। শুরু থেকেই এক্সপেরিমেন্ট—আর তাই দর্শক স্বভাবতই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখবে, ঠিক কতটা মিলল, আর কতটা বদলাল।
‘চারুলতা মিত্র’ চরিত্রটি ফেলুদার মতো বুদ্ধিমান, কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা এক ব্যক্তিত্ব। তার পোশাকে নেই গোয়েন্দার স্টিরিওটাইপ, কথায় আচরণে স্পষ্ট আধুনিক নারীর প্রতিচ্ছবি। সে যেমন সাহসী, তেমনি সংবেদনশীল। কষ্টে চোখের জল ফেলে, আবার হাসি-ঠাট্টাতেও পিছপা নয়। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেয়, বিয়ের প্রস্তাব দশবার ফিরিয়েও জীবনসঙ্গীর প্রয়োজন অস্বীকার করে না।
চারুলতা জানে আশপাশের মানুষকে সঙ্গী করেই এগোতে হয়। পুলিশ অফিসার লস্করবাবুকে নিয়ে মজা করলেও, তার দক্ষতাকে সম্মান জানাতে জানে। সিরিয়াল কিলার ধরার মিশনে লস্করবাবুকে নিজের টিম মেম্বার হিসেবেই দেখে সে।
এখানেই চরিত্রটি পুরুষ গোয়েন্দা চরিত্রদের থেকে আলাদা হয়ে যায়। নারীর প্রাকৃতিক ‘এমপ্যাথি’ তাকে আরও মানবিক করে তোলে। চারুর খুড়তুতো ভাই ও অ্যাসিস্ট্যান্ট তপু বলেই দেয়, “চারুদি ফেলুদার মতো হলেও, আসলে সে নিজের মতো।”
এই নতুন গোয়েন্দা চরিত্র শুধু নারী বলে নয়, তার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, সংবেদনশীলতা আর বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ দিয়ে আলাদাভাবে নজর কাড়ছে।
এসএস