প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দিয়েছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানি। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দেওয়া ওই ভাষণে তিনি প্রেসিডেন্ট আসাদের শাসনের অবসান ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ‘নতুন সিরিয়া’কে সমর্থনের আহ্বান জানান।
আল-শিবানি বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক দিনে আপনাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার জন্য আমি সম্মানিত বোধ করছি, যেদিন আমার বক্তব্যের ঠিক আগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আমাদের ১৯৩ জন অংশীদারের সঙ্গে নতুন, স্বাধীন ও মর্যাদার সিরিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী পতাকা জাতিসংঘের পতাকাস্তম্ভে উত্তোলন করা হয়েছে। ’
সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলকে ‘এক দশকের’ নৃশংসতার জন্য দায়ী করে তিনি বলেন, ‘দেশটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল, এবং নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছিল, নির্যাতন করা হয়েছিল এবং পদ্ধতিগতভাবে নিখোঁজ করা হয়েছিল। রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, এবং প্রজন্ম যন্ত্রণা ও ক্ষতির ভারে ভেঙে পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সিরিয়া বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রবেশাধিকার প্রদান করে এবং একটি ট্রানজিশনাল জাস্টিস কমিশন গঠনের পরিকল্পনা করছে।’
নতুন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানগুলো এখন ব্যারেল বোমার পরিবর্তে ফুল ফেলছে।’
তার বক্তব্যে তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই শাস্তি ‘সিরিয়াকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অংশীদার হওয়ার পরিবর্তে সাহায্য-নির্ভর দেশের ভূমিকা পালন করতে বাধ্য করেছে।’
আল-শিবানি সিরীয় ভূখণ্ডে ইসরাইলি বিমান হামলাকে ‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
পাশাপাশি তিনি নিরাপত্তা কাউন্সিলকে ১৯৭৪ সালের বিচ্ছিন্নতা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ইসরাইলকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে তৎকালীন বিদ্রোহী বাহিনীর ঝড়ো হামলার মুখে রাশিয়ায় পালিয়ে যান দুই যুগ ধরে ক্ষমতায় থাকা বাশার আল-আসাদ। এর মধ্য দিয়ে ১৯৬৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টির শাসনের অবসান ঘটে। আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে ইসরাইল সিরিয়ার সামরিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিমান অভিযান শুরু করেছে।
আরএম/এনএস