চীন নয়, ভারত ও ভিয়েতনামে তৈরি হবে আইফোন

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনার জেরে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাপল। চীনে উৎপাদিত আইফোনসহ বিভিন্ন ডিভাইস মার্কিন বাজারে না আনার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত কঠোর শুল্কনীতির প্রভাবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ।

অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আগামী মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সব আইফোনই তৈরি হবে ভারতে। অন্যদিকে, আইপ্যাড, অ্যাপল ওয়াচ ও এয়ারপডসের মতো পণ্য উৎপাদন করা হবে ভিয়েতনামে।’ তিনি জানান, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মাত্র একটি প্রান্তিকে অ্যাপলের অতিরিক্ত খরচ হয়েছে ৯০০ মিলিয়ন ডলার। এর পরিপ্রেক্ষিতেই চীন থেকে সরবরাহ শৃঙ্খলা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত।

অ্যাপল জানিয়েছে, আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। পাশাপাশি ভারত ও ভিয়েতনামে নতুন কারখানা স্থাপনের খরচও পড়বে বিলিয়ন ডলারের ঘরে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল রাজনৈতিক চাপ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী সরবরাহের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার কৌশলও বটে।

টিম কুক জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য উৎপাদন ভারতে এবং ভিয়েতনামে সরিয়ে নেওয়া হলেও আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য চীন এখনো অ্যাপলের প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবেই থাকছে।

শুধু অ্যাপল নয়, শুল্ক সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জে আমাজনও কৌশলগত রদবদল শুরু করেছে। কোম্পানির সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি জানিয়েছেন, ‘আমরা বিভিন্ন বিক্রেতার বৈচিত্র্য নিশ্চিত করছি, যাতে শুল্ক ও জটিলতা থেকে ব্যবসা নিরাপদ থাকে।’
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে আমাজনের মোট বিক্রি ৯% বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৫.৭ বিলিয়ন ডলারে। একইসাথে তাদের লাভ বেড়েছে ৬০%, প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ কেবল কূটনীতির নয়, বিশ্ব প্রযুক্তি সরবরাহ শৃঙ্খলারও বড় রূপান্তর ঘটাচ্ছে। অ্যাপলের ভারতমুখী উদ্যোগ ও আমাজনের বিকল্প পরিকল্পনা এর বড় দৃষ্টান্ত। শুল্ক নীতির এই উত্তেজনার মাঝেও প্রযুক্তি জায়ান্টরা পরবর্তী দশকের জন্য নতুন করে গুছিয়ে নিচ্ছে নিজেদের।

আরআর

Share this news on:

সর্বশেষ