অবশেষে হ্যারি কেইনের স্বপ্নপূরণ

একটা আফসোস যেন থেকেই গেল—মাঠে দাঁড়িয়ে শিরোপা উদযাপনটা আর করা হলো না! তবে হ্যারি কেইন কি সেটা মনে রাখবেন? সম্ভবত না। সিনিয়র ক্যারিয়ারে ১৪ মৌসুম ধরে একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা পেছনে ফেলে ১৫তম বছরে এসে যদি প্রথম শিরোপার স্বাদ পাওয়া যায়, তখন কি আর এমন কিছু মনে রাখার সময় থাকে?  

টটেনহ্যাম ও ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি শিরোপার খুব কাছাকাছি ছিলেন তিনি। আর কতবার যে লিগে দ্বিতীয় হতে হয়েছে তাকে! এরপর অবশেষে প্রথম বড় শিরোপা জিতেছেন হ্যারি কেইন। বুন্দেসলিগার শিরোপা যেন তার হাতে পৌঁছানো সময়ের ব্যাপার ছিল—কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন।

গত সপ্তাহে আগসবুর্গের বিপক্ষে হলুদ কার্ডের কারণে আরবি লাইপজিগের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে পারেননি কেইন। ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়। এরপর শিরোপা নিশ্চিত করতে বায়ার লেভারকুজেনের হোঁচটের প্রয়োজন ছিল। রোববার ফ্রাইবুর্গের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে লেভারকুজেন, এবং সেই ফলাফলের মাধ্যমেই বায়ার্ন মিউনিখ ৩৪তম বুন্দেসলিগা শিরোপা জিতে নেয়—কেইন জেতেন জীবনের প্রথম মেজর ট্রফি।

কেইনের বায়ার্ন যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের আগস্টে। তিনি যখন ব্যাভারিয়ায় এলেন, তখন বায়ার্নের ‘কেইন ৯’ লেখা জার্সির চাহিদা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই হতাশা—ডিএফএল-সুপারকাপে লাইপজিগের কাছে হার।

তিনি টটেনহ্যামের হয়ে শিরোপা জিততে পারেননি, বিষয়টার না হয় ব্যাখ্যা দেওয়া যায়। কিন্তু সিরিয়াল উইনার বায়ার্নও এভাবে শিরোপা জিততে ভুলে যাবে, তা কী করে হয়? সেই ম্যাচ থেকে জন্ম নেয় কথিত ‘কেইন অভিশাপ’।

তবে এরপর মাঠে সব উত্তর দিয়েছেন কেইন। অভিষেক মৌসুমেই ৪৪ গোল করেছেন, এর মধ্যে বুন্দেসলিগায় ৩৬টি। দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে ফেলার মতো গতির সঙ্গে এগিয়ে গেছেন লেভান্ডভস্কির ৪১ গোলের রেকর্ডের দিকে। এখন পর্যন্ত বায়ার্নের হয়ে ৭৭ গোল ও ২৩ অ্যাসিস্ট নিয়ে ১০০ গোলে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছেন তিনি।

তার মাঠের পারফরম্যান্স যেমন দুর্দান্ত, মাঠের বাইরেও তিনি হয়ে উঠেছেন বায়ার্ন পরিবারের অংশ। সতীর্থদের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক, ক্লাব সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ, ভক্তদের সঙ্গে খোলামেলা যোগাযোগ—সবই তাকে ‘প্রিয়’ করে তুলেছে।

এই মৌসুমে তার প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই। শুধুই গোল নয়—মুসিয়ালা, সানে, গেরেইরোদের খেলার ধার বাড়িয়েছেন তিনি। রেকর্ড ট্রান্সফার ফির বিপরীতে বায়ার্ন যে বাজি ধরেছিল, কেইন তা পুরোপুরি উসুল করে দিয়েছেন।

আর এখন সব জল্পনার অবসানও হয়ে গেল। কেইন ট্রফি পেয়েছেন— দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এর চেয়ে বেশি কিছু বোধ হয় তিনি চাননি আর। এবং সামনে আরও অনেক কিছু জেতার সুযোগ এখন তার সামনে। মিউনিখে এখন উদযাপন শুরু হবে— ঐতিহ্যবাহী এই ‘বিয়ার স্নান’টা যে সারা জীবন মনে রাখবেন কেইন, তা বলাই বাহুল্য!

আরএম/এসএন


Share this news on: