পাক-ভারত ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব রাশিয়ার

কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনা ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে চলমান উত্তেজনা নিরসনে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া।

রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে এই প্রস্তাব দেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। রাশিয়ার পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ল্যাভরভের সঙ্গে ইশাক দারের টেলিফোনে আলাপের পর বিবৃতি প্রকাশ করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইশাক দার পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বিবৃতিতে রাশিয়া বলেছে, নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।

টেলিগ্রামে পোস্ট করা বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মির উপত্যকার পেহেলগাম এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার রাজনৈতিক সমাধানে ভারত ও পাকিস্তান যদি আগ্রহী হয়, তাহলে রাশিয়া সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার দুদিন পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন ল্যাভরভ। এ সময় প্রতিবেশী দুই দেশের মাঝে বিদ্যমান মতবিরোধের সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পার্বত্য অঞ্চলের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলার ঘটনার পর থেকে প্রতিবেশী দুই পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

পেহেলগামের ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনা ঘিরে হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে ব্যাপক ক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে। পাশাপাশি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জোরাল হয়েছে ভারতে।

কাশ্মিরে দশকের পর দশক ধরে স্বাধীনতাকামী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাকিস্তান সমর্থন দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত। হিমালয় অঞ্চল লাগোয়া ব্যাপক বিতর্কিত এই ভূখণ্ড নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দু’টি অতীতে দু’বার যুদ্ধ করেছে।

পেহেলগামে হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তি’ বাতিল ও পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল করে ভারত। একই সঙ্গে দেশটিতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ভারতের এসব পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও ভারত সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘সিমলা চুক্তি’ বাতিল করে। এই হামলার পর দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে। ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ এবং পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজ ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ