পুতিনের আমন্ত্রণে শি জিনপিং-এর রাশিয়া সফর

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নাটকীয় পরিবর্তন। চিরাচরিত মিত্রতা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ধারায় ভাঙন ধরিয়ে দিয়েছেন তিনি। চীনের সঙ্গে শুরু করেছেন শুল্কযুদ্ধ, আর রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের নানা জটিল সমীকরণ।

এমন ঘোলাটে প্রেক্ষাপটে আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের বার্ষিকী ঘিরে আয়োজিত রাশিয়ার সামরিক মহড়ায় এবার আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন শি জিনপিং।

রাশিয়ার সামরিক শক্তির এই প্রদর্শন মূলত একটি রাজনৈতিক বার্তা, বিশ্বব্যবস্থায় রাশিয়া-চীন জোট কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা আর চাপের মুখেও রাশিয়া একের পর এক অবস্থান জিতে নিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

চীনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র ও সেনা সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলোর। তবে চীন বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা কেবল অর্থনৈতিক সহযোগিতাই করছে। চীন-রাশিয়া বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব, বিকল্প বৈশ্বিক কাঠামো গঠনের উদ্যোগ এবং ইরান, উত্তর কোরিয়া, তুরস্কের মতো দেশগুলোর সঙ্গে জোট গড়ার কৌশল বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বে বড় এক উদ্বেগের কারণ।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন এই মিত্রতাকে ভাঙার কৌশল নিলেও তেমন সফল হয়নি। ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করার কথা বললেও, বাস্তবে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন, এমনকি বিরল খনিজ সম্পদের বিনিময়ে রাজনৈতিক চুক্তি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে, চীনকেও চাপে ফেলতে শুরু হয়েছে বাণিজ্যযুদ্ধ। কিন্তু পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের উপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসনকে অনেকটা ব্যাকফুটে নিয়ে গেছে।

এই প্রেক্ষাপটে শি জিনপিংয়ের আসন্ন রাশিয়া সফর কেবল একটি আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় সফর নয়। বরং এটি ট্রাম্পের নীতির প্রতি সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিশ্লেষিত হচ্ছে। পুতিন-শি জিনপিং বৈঠকে তাদের মিত্রতা আরও দৃঢ় করার পাশাপাশি একটি শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিতে চায় ওয়াশিংটনকে, বিশ্বে এখন বিকল্প শক্তির কেন্দ্রও গড়ে উঠছে।

এসএম/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পোল্যান্ডে সেনা মোতায়েন নেদারল্যান্ডসের Nov 21, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টা ও খালেদা জিয়ার সঙ্গে নাহিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ Nov 21, 2025
img
রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে আগুন Nov 21, 2025
img
'আমরা কখনো না কখনো কাউকে না কাউকে নিজেদের মনে ভালো জায়গায় বসাই' Nov 21, 2025
img
সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জামায়াত আমিরের অংশগ্রহণ Nov 21, 2025
img
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানদের সাক্ষাৎ Nov 21, 2025
img
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কড়া বার্তা Nov 21, 2025
img
ভালো করতে পারেননি তাসকিন, হেরেছে তার দল নর্দার্ন ওয়ারিয়র্স Nov 21, 2025
img
নিউমার্কেটে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ Nov 21, 2025
img
বন্দর রক্ষায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি Nov 21, 2025
img
বিএনপিতে কোনো নেতৃত্বের সংকট নেই : মনিরুল হক চৌধুরী Nov 21, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Nov 21, 2025
নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা: প্রধান উপদেষ্টা Nov 21, 2025
img
বিশ্ব বাজারে ফের কমল স্বর্ণের দাম Nov 21, 2025
img
হাসিনা সরকার জনগণকে ভোটের সুযোগ না দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে : শামীম সাঈদী Nov 21, 2025
img
আমি ব্যতীত অন্য কেউ মনোনয়ন পেলে আমি তার পক্ষে ভোট চাইতাম : মান্নান Nov 21, 2025
img
সশস্ত্র বাহিনী জাতির আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে: তারেক রহমান Nov 21, 2025
img
ময়মনসিংহে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ, যুবলীগ কর্মী গ্রেপ্তার Nov 21, 2025
img
বাংলাদেশে ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় সমবেদনা জাতিসংঘের Nov 21, 2025
img
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এবার মুখ খুলেছে পাকিস্তান Nov 21, 2025