যে কারণে ক্লাব বিশ্বকাপে দেখা যাবে না আর্সেনাল ও বার্সেলোনাকে

বিশ্বের বড় বড় সব ক্লাবগুলো নিয়ে শুরু হবে বিশ্বকাপ। তবে সেই বিশ্বকাপে খেলতে পারবে না ক্লাব ইতিহাসের অন্যতম সেরা দুই ক্লাব বার্সেলোনা ও আর্সেনাল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ চার দলের মধ্যে এই দুটি দল এখনও টিকে আছে। বলতে গেলে, ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা এই দুই ক্লাব। তবে কি না, এই দল দুটিই খেলতে পারবে না ক্লাব বিশ্বকাপে!
 
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। এ মাসের একেবারে শেষ দিকে, অর্থাৎ ৩১ মে মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত হবে ইউসিএল-এর ফাইনাল। তবে ফাইনালে যদি আর্সেনাল ও বার্সেলোনা মুখোমুখি হয়, তাহলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যাবে ফিফা। কেননা, এই দুই ক্লাব বিশ্বকাপে নেই। তাই এই দুই দল যদি ইউসিএল-এর ফাইনাল খেলে, তাহলে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ইউরোপের সেরা ক্লাবটিকে দেখা যাবে না।

সান সিরোয় আজ (৬ মে) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান ও বার্সেলোনা। প্রথম লেগ ড্র হয়েছিল ৩-৩ গোলে। রাতে আরেক সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে পিএসজি ও আর্সেনাল। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হেরেছিল গানার্সরা। অর্থাৎ, আর্সেনাল ও বার্সেলোনা দুই দলেরই ফাইনালে ওঠার সুযোগ রয়েছে।

ক’দিন আগে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে কোপা দেল রের শিরোপা জিতেছে বার্সেলোনা। লিগ শিরোপা জয়েরও একেবারে দ্বারপ্রান্তে আছে কাতালানরা। অন্যদিকে আর্সেনালের সুযোগ রয়েছে ইউসিএলের ফাইনালে ওঠার। অর্থাৎ, এই দুটি দল থাকছে না ক্লাব বিশ্বকাপে! তবে এ ব্যাপারে যে প্রশ্ন উঠবে, তা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।
আরও পড়ুন: নেইমারের বাসায় আছে সাকিবের জার্সি, চেনেন তামিমকেও!

এর আগে ফিফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৪ এই সময়ের মধ্যে আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় যারা মহাদেশীয় ক্লাব প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, ২০২৫ ক্লাব বিশ্বকাপে তাদের জায়গা নিশ্চিত। সেই অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে ২০২৪- এই চার বছরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী তিন টি দল সরাসরি ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে। সেই তিন ক্লাব হলো- চেলসি (২০২১), ম্যানচেস্টার সিটি (২০২৩) ও রিয়াল মাদ্রিদ (২০২২ ও ২০২৪)।

ইউরোপ থেকে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলবে মোট ১২টি দল। তিনটি দল সরাসরি জায়গা করে নেওয়ায় বাকি ছিল আরও ৯ দল। তবে উয়েফার অধীনস্ত ক্লাবগুলোর র‌্যাঙ্কিং সিস্টে অনুযায়ী নিশ্চিত হয়েছে বাকি ৯ দল। যেখানে গত চার মৌসুমের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ক্লাব বিশ্বকাপে প্রতিটি দেশ থেকে দুটি দল অংশ নিতে পারবে, ফিফা এই নিয়মও চালু করেছে। স্পেন থেকে রিয়াল যেহেতু সরাসরি জায়গা পেয়েছে, তাই এই দেশ থেকে বাকি ছিল আর একটি দলের জায়গা। সেখানে বার্সেলোনাকে পেছনে ফেলে জায়গা করে নিয়েছে আতলেটিকো মাদ্রিদ। তবে এখানে প্রশ্ন উঠতেই পারে, বার্সেলোনা যেখানে লিগ শিরোপা দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে, সেখানে তাদের টপকে আতলেটিকো মাদ্রিদ ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা পায় কী করে?
 
২০২২ ও ২০২৩ চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল বার্সেলোনা। তার আগে ২০২১ সালে শেষ ষোলো ও ২০২৪ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়েছিল তারা। অন্যদিকে ২০২১ সালে শেষ ষোলো থেকে বাদ পড়েছিল আতলেটিকো মাদ্রিদ। তার পরের বছর ক্লাবটি বাদ পড়েছিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে।

২০২৩ সালে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পরে আতলেটিকো। তবে ২০২৪ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল তারা। অর্থাৎ ইউরোপে গত চার বছর পরিক্রমায় বার্সার চেয়ে আতলেটিকোর পারফরম্যান্স ভালো ছিল। আর সে কারণেই ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে আতলেটিকো। উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, চার বছরের এই র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা ষষ্ঠ দল হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে আতলেটিকো মাদ্রিদ।

ইংল্যান্ড থেকে তাই ক্লাব বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটি। কেননা ২০২১ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে চেলসি। আর ২০২৩ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে সিটি। ইংল্যান্ড থেকে একটি দল গত চার বছরের মধ্যে একবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে অন্য দলটি নির্ধারণ করা হতো উয়েফার র‌্যাঙ্কিং সিস্টেম অনুযায়ী। এই সিস্টেমে উয়েফার চার বছরের র‌্যাঙ্কিংয়ে চতুর্থ সেরা ইন্টার মিলান। অন্যদিকে দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা পেয়েছে পিএসজি।

এমআর/টিএ


Share this news on: