বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের জন্য কানাডার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৬ মে) স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিক বাণিজ্য প্রতিনিধি পল থপিলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করা এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনা সম্প্রসারণের বিষয়েও আলোচনা হয়।
মি. থপিল তার দ্বিতীয় সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন এবং তার নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল রয়েছে, যার সদস্যরা কানাডার খ্যাতনামা কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহী—যেমন বেল হেলিকপ্টার, ব্ল্যাকবেরি, গিলডান অ্যাকটিভওয়্যার, জেসিএম পাওয়ার এবং অ্যাডভানটেক ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনস।
থপিল বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় বিশ্বাস করি। তাই আমি ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের নিয়ে এসেছি, আমরা বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চাই।’
তিনি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে গৃহীত সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এসব পদক্ষেপ সাহসী এবং সময়োপযোগী।
কানাডার প্রতিনিধি দলের প্রধান বলেন, ‘আপনি একটি চমৎকার উপদেষ্টা দল গঠন করেছেন। আমরা ইতিবাচক অগ্রগতির স্পষ্ট লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। আপনার সরকারের নেওয়া সংস্কারগুলো দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে তুলছে, আর কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়।’
অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছি—যা আমরা পেয়েছি, তা এক কথায় বিপর্যয়। যেন ১৫ বছরের দীর্ঘ একটি ভূমিকম্পের পর যা পড়ে থাকে, তাই হাতে পেয়েছি। অসম্ভব প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা ধারাবাহিক সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। আর সামনে এগোতে আমাদের পাশে এমন বন্ধুদের প্রয়োজন।’
প্রধান উপদেষ্টা কানাডিয়ান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য উষ্ণ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন শিল্প সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তুত এবং একটি আঞ্চলিক রপ্তানি হাব হিসেবে গড়ে ওঠার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন, উৎপাদন করতে পারেন এবং এখান থেকে অন্যান্য বাজারে রপ্তানি করতে পারেন। আমরা আমাদের জনগণকে প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত এবং কানাডার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদার হতে চাই। কানাডাকে সবসময় বাংলাদেশে স্বাগত।’
প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি সমন্বয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কানাডীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, হাইকমিশনের সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেব্রা বয়েস, বেল হেলিকপ্টারের কমার্শিয়াল সেলস ম্যানেজার উইলিয়াম ডিকি, ব্ল্যাকবেরির হেড অব গভর্নমেন্ট সল্যুশনসের ব্র্যাড কোলওয়েল, এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট কানাডার দক্ষিণ এশিয়া প্রতিনিধি ল্যাডিসলাউয়া পাপারা, গিলডান অ্যাকটিভওয়্যারের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুয়ান কন্ট্রেরাস, জেসিএম পাওয়ারের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মো. আলী এবং অ্যাডভানটেক ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনসের গ্লোবাল সেলস ভাইস প্রেসিডেন্ট টনি র্যাডফোর্ড।
আরএ