বিনিয়োগে মন্দা, পাঁচ মাসে ৮ শতাংশের নিচে ঋণ প্রবৃদ্ধি

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার ছায়া এখনও কাটেনি বেসরকারি খাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, মার্চ মাসে বেসরকারি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশে। যদিও এটি আগের মাস ফেব্রুয়ারির ৬ দশমিক ৮২ শতাংশের তুলনায় কিছুটা বেশি, তা এখনও কাঙ্ক্ষিত ৮ শতাংশের নিচেই রয়ে গেছে টানা পাঁচ মাস ধরে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতে ব্যাংক এ তথ্য জানায়।

গত বছরের জুলাইয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ শুরু হওয়ার পর থেকেই বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে টান পড়ে। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা আগস্টে নেমে আসে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় ধারাবাহিক পতন। নভেম্বরে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, ২০১৫ সালের পর এই হার আবারও ২০২১ সালের মে মাসের মতো নিচে নেমেছে। কোভিড মহামারির সময় সে সময় প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা না থাকাই এর প্রধান কারণ। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সার্বিক অর্থনীতি স্থিতিশীল নয়, তাই নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ কম। ব্যবসা বাড়ছে না, ফলে ঋণের চাহিদাও কমে গেছে।’ তার ভাষায়, ‘বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সুদের হার অনেক বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই উচ্চ হারে ঋণ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ নির্ধারণ করেছিল। এলসি খোলার পরিসংখ্যানেও দেখা যাচ্ছে বিনিয়োগে খরা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি খোলা কমেছে ২৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফেব্রুয়ারিতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মূল্যস্ফীতি না কমা পর্যন্ত নীতিসুদের হার ১০ শতাংশই থাকবে। মূল্যস্ফীতি কমলে নীতিসুদহার কমানো হবে।’

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা মব নয় : উপদেষ্টা মাহফুজ Jul 04, 2025
img
কানাডার ৬টি বিমানবন্দরে বোমা হামলার হুমকি Jul 04, 2025
img
‘সম্পর্ক বিষিয়ে গেলে...’ হঠাৎ কেন বললেন অভিনেত্রী সামান্থা! Jul 04, 2025
img
মা হতে চান, যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে সন্তান দত্তক নেবেন অভিনেত্রী জয়া! Jul 04, 2025
img
ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় আটক ১০ Jul 04, 2025
img
যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে প্রাণ গেল ২ জনের Jul 04, 2025
img
পশ্চিম তীরকে ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত করার আহ্বানের তীব্র নিন্দা জানাল ওআইসি Jul 04, 2025
img
আবুধাবিতে ২৫ মিলিয়ন দিরহামের লটারি জিতলেন প্রবাসী বাংলাদেশি Jul 04, 2025
img
বাবা, মা, স্ত্রী-কন্যাকে ছাড়া থাকতে পারেন না অভিনেতা অভিষেক! Jul 04, 2025
img
ইরানের তেল বাণিজ্য ও হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র Jul 04, 2025
img
রণবীরের ‘রামায়ণ’ ঝলকে মুগ্ধ নেটদুনিয়া, ট্রোলের মুখে ‘আদিপুরুষ’-এর প্রভাস Jul 04, 2025
img
সকালের মধ্যে দেশের ৬ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 04, 2025
img
বলিউড ও হলিউডের ছোঁয়ায় রণবীরের ‘রামায়ণ’ হয়ে উঠছে মহাকাব্যিক! Jul 04, 2025
img
ব্যাটিং বিপর্যয়ে বিসিবি সভাপতির হতাশা, দায় দেখছেন মানসিকতায় Jul 04, 2025
img
ইরানের সঙ্গে সংঘাত কেবল কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা উচিত, ট্রাম্পকে বললেন পুতিন Jul 04, 2025
img
মূল লক্ষ্য থেকে পিছু হটবে না মস্কো, ট্রাম্পকে বললেন পুতিন Jul 04, 2025
img
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ: গোলাম পরওয়ার Jul 04, 2025
img
ঋতুপর্ণা হলেন বাংলাদেশের মেসি, বললেন বাফুফে কর্মকর্তা Jul 04, 2025
img
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বিনিয়োগ বাড়বে : গভর্নর Jul 04, 2025
img
ইতিহাসে প্রথমবার, ৩৫টি ভাষায় সরাসরি অনুবাদ হবে মক্কায় জুমার খুতবা Jul 04, 2025