মুসলিম লীগের মতো আওয়ামী লীগও উৎখাত হয়েছে: বদরুদ্দীন উমর

আওয়ামী লীগ ১৯৫৪ সালে উৎখাত হওয়া মুসলিম লীগের পরিণতির পথেই হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন লেখক, গবেষক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারিয়েছে এবং তা আর ফিরে আসার মতো অবস্থায় নেই।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

বদরুদ্দীন উমর বলেন, “একটা দেশে কেন গণঅভ্যুত্থান হয়, সেটা বুঝতে হবে। যেখানে নিয়মিত নির্বাচন হয়, সেখানে অভ্যুত্থান হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ জনগণের ওপরে ব্যাপক নিপীড়ন চালিয়েছে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে জনগণের মধ্যে পরিবর্তনের তাগিদ তৈরি হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “ছাত্রদের কোটা আন্দোলন ছিল সেই পরিবর্তনের দাবির স্ফুলিঙ্গ। যদিও এটি সরাসরি রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না, এটি ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। কিন্তু ছাত্রদের ওপর ছাত্রলীগের বর্বরতা এবং শেখ হাসিনার ঔদ্ধত্যপূর্ণ মনোভাব আন্দোলনটিকে আরও বিস্ফোরক করে তোলে।”

বদরুদ্দীন উমর আরও বলেন, “এই কোটা আন্দোলন জনগণের জন্য একটি প্রতিরোধের অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। এর মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় গণঅভ্যুত্থান, যা শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পতন ঘটায়। শেখ হাসিনা শুধু ক্ষমতা হারাননি, দেশও ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তার সঙ্গে হাজার হাজার নেতাকর্মীও পালিয়েছেন। এমন ঘটনা দুনিয়ার ইতিহাসে বিরল।”

তিনি বলেন, “তিউনিসিয়ায় যেমন স্বৈরশাসক পালিয়েছিলেন, কিন্তু তার দলের লোকজন রয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গণবিচারের ভয়ে পালিয়ে গেছেন। এটি প্রমাণ করে, তারা সমাজে কী পরিমাণ দমন-পীড়ন চালিয়েছিল।”

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, “অনেকে ভাবছেন আওয়ামী লীগ আবার ঘুরে দাঁড়াবে, কিন্তু ইতিহাস বলে, যেমন করে মুসলিম লীগ ১৯৫৪ সালে উৎখাত হয়েছিল, তেমনি আজ আওয়ামী লীগও ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে। এখনকার পার্থক্য শুধু এটুকু—তখন ভারতের হস্তক্ষেপ ছিল না, এখন রয়েছে। তবে ভারতের ওপর নির্ভর করে আওয়ামী লীগের ফিরে আসা সম্ভব নয়।”


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সীমানা পুনর্নির্ধারণে স্বচ্ছতার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি হবে: জামায়াতের নায়েবে আমির Jul 02, 2025
img
দলীয় প্রতীক শাপলা চেয়ে ইসিতে আবেদন নাগরিক ঐক্যের Jul 02, 2025
img
২৪ ঘন্টায় করোনায় আরও ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৭ Jul 02, 2025
img
শেখ রেহানার স্বামী ও দেবরের ১৫ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ Jul 02, 2025
img
সব কিছুতে ঐকমত্য হয়ে যাওয়াটা বাস্তবসম্মত সম্ভব নয়: জোনায়েদ সাকি Jul 02, 2025
img
নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন শান্ত Jul 02, 2025
img
মিয়ানমারকে হারিয়ে এশিয়ান কাপের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ Jul 02, 2025
img
চট্টগ্রামে ডিআইজি কার্যালয় ঘেরাও করল বৈষম্যবিরোধীরা Jul 02, 2025
img
ঋতুপর্ণার জোড়া গোল, জয়ের আরও কাছে বাংলাদেশ Jul 02, 2025
img
‘হাতপাখার সমাবেশ’ বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ : ফারুক Jul 02, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনায় নৌবাহিনীর সঙ্গে চুক্তির পরিকল্পনা Jul 02, 2025
img
প্রাক্তনকে ভুলে এবার বীরের সঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু তারা সুতারিয়ার Jul 02, 2025
img
শেফালির মৃত্যুর পরও ৭৭ বছর বয়সেও ফিলারে ভরসা মুমতাজের Jul 02, 2025
img
নতুন মামলায় গ্রেফতার আনিসুল-সালমান-দীপু মনি Jul 02, 2025
img
ইভিএম ক্রয়ে অনিয়ম: ইসির সাবেক তিন কর্মকর্তাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ Jul 02, 2025
img
আমি ফাতিমার বাবা নই, না বয়ফ্রেন্ড : আমির খান Jul 02, 2025
img
কুশল মেন্ডিসকে ফেরালেন অভিষিক্ত তানভীর Jul 02, 2025
img
গণমাধ্যমের নৈতিক মানদণ্ড রক্ষায় জাতিসংঘকে সহায়তার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Jul 02, 2025
img
পদ্মার এক বাঘাইড় বিক্রি সাড়ে ৪৩ হাজার টাকায় Jul 02, 2025
img
ফের পেছাল বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন Jul 02, 2025