চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার আঁচ লেগেছে খেলাধুলাতেও। এরই প্রেক্ষিতে দুই দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট—আইপিএল ও পিএসএল স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে গুঞ্জন উঠেছে, আইপিএলের জন্য নতুন সময় বের করতে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ বাতিল ও এশিয়া কাপ স্থগিত করার পরিকল্পনাও করছে ভারত।
তবে এই বিষয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) এক মুখপাত্র ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে।
প্রথমে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হওয়া আইপিএল পরবর্তীতে এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়। বিসিসিআই জানিয়েছে, আগস্টে আবারও এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার চিন্তাভাবনা করছে। তবে ওই সময় ভারতীয় দলের বাংলাদেশ সফর এবং সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের নির্ধারিত সূচি থাকায় বিষয়টি জটিল হয়ে উঠছে।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিসিসিআই মে মাসের বেশি অপেক্ষা করতে চায় না। বোর্ডের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ‘আমরা আপাতত এক সপ্তাহের জন্য আইপিএল স্থগিত করেছি। পরবর্তী তিন দিনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
আইপিএল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই স্থগিতাদেশ সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই নেওয়া হয়েছে— ক্রিকেটার, সম্প্রচার সংস্থা, স্পন্সর এবং সমর্থকদের কথা বিবেচনায় রেখেই। তারা আরও জানায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি বিসিসিআইয়ের পূর্ণ আস্থা আছে এবং দেশের পাশে থাকাই তাদের অগ্রাধিকার।
ক্রিকবাজ বিশ্লেষণ করে বলছে, বিসিসিআই এখনো আশাবাদী যে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত কমে যাবে। তেমনটা হলে দিনে দুটি করে ম্যাচ আয়োজন করে ১২ দিনের মধ্যে আইপিএলের বাকি ১৬টি ম্যাচ শেষ করতে চায় তারা।
অন্যদিকে, ওয়েবসাইটটি আরও জানায়—সরকারের উচ্চপর্যায়ের পরামর্শেই আপাতত আইপিএল এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায় যে, পরিস্থিতির উন্নতির একটা সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আইপিএলের জন্য বিকল্প সময় ও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হতে পারে। এর সঙ্গে জড়িত আছে বিদেশি ক্রিকেটারদের বিষয়টিও— তারা স্থগিত সময়ে ভারতে থাকবেন নাকি নিজ দেশে ফিরে যাবেন, সেই সিদ্ধান্তও এখনো হয়নি।
এ মাসেই আইপিএল সম্পন্ন না করতে পারলে পরবর্তীতে বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। আগস্টে ইংল্যান্ডে চলবে দ্য হান্ড্রেড (৫-৩১ আগস্ট), তাই ওই সময়ে ইংলিশ ক্রিকেটারদের পাওয়া যাবে না। একই সময়ে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগও (১৪ আগস্ট-২১ সেপ্টেম্বর) চলবে, তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররাও ব্যস্ত থাকবেন।
সব মিলিয়ে বিসিসিআই এখনও নিশ্চিত নয় বাংলাদেশ সফর বাতিল করবে কি না। তারা আপাতত পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেই ধীরে এগোচ্ছে।
এসএস/এসএন