দেশে একটি রিপাবলিক তৈরির চেষ্টা চলছে: আলী রিয়াজ

বাংলাদেশে একটি নতুন রিপাবলিক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের চেষ্টার কথা তুলে ধরে সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ।রোববার (১১ মে) রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

'রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কার' বিষয়ক এ সভার আয়োজন করে নাগরিক উদ্যোগ, নাগরিক কোয়ালিশন এবং সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোট। সভায় সংবিধান সংস্কার, ন্যায়ের ভিত্তিতে রাষ্ট্র বিনির্মাণ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাতটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
 
ড. আলী রীয়াজ বলেন, বাংলাদেশে একটি রিপাবলিক তৈরির চেষ্টা চলছে। এটি কেবল রাজনৈতিক প্রয়োজন নয়, বরং নৈতিক ও ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা থেকে উদ্ভূত এক প্রয়াস। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন ও আহত হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়েই আমাদের নতুন রাষ্ট্র কাঠামোর কথা ভাবতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়তে হলে শুধু বর্তমান সংকট বিবেচনায় নিলেই চলবে না  অতীতের অভিজ্ঞতা, বর্তমানের ব্যর্থতা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা মিলিয়ে সমন্বিত রূপকল্প প্রণয়ন করতে হবে।

আলোচনায় ড. রীয়াজ বিদ্যমান সংবিধান নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর ভাষায়, সংবিধানের মধ্যে এমন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে যেখানে শেখ হাসিনার মতো একজন নেতার একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার কোনো সাংবিধানিক বাধা ছিল না। ফলে গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে এবং নির্বাহী বিভাগকে যদি অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে গণতন্ত্র কখনোই কার্যকর হতে পারে না। আমাদের সংবিধান ও শাসন কাঠামো এমনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত হয়।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ড. রীয়াজ বলেন, উচ্চকক্ষের প্রধান দায়িত্ব হবে আইন ও নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ার নজরদারি ও মূল্যায়ন। তবে একে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিলে এটি নিম্নকক্ষের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থানে যেতে পারে যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হতে পারে। তাই ভারসাম্য রক্ষা করেই এই কাঠামো তৈরি করতে হবে।

এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন আর নিরপেক্ষ নেই: তাহের Nov 14, 2025
img
পর্দায় হীরাবেন মোদির চরিত্রে রবীনা ট্যান্ডন Nov 14, 2025
img
শোয়েব মালিকের সাথে বিচ্ছেদের পর প্যানিক অ্যাটাকে ভুগতেন সানিয়া মির্জা Nov 14, 2025
img
আজ ঘোষণা করা হবে শাকসু নির্বাচনের তারিখ ও তফসিল Nov 14, 2025
img
সমালোচিত হয়েও রাশমিকার ‘দ্যা গার্লফ্রেন্ড’ সিনেমায় মুগ্ধ দর্শক Nov 14, 2025
img
লাঞ্চে গেছে আয়ারল্যান্ড, দীর্ঘ হল বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা Nov 14, 2025
img
স্থগিত করা হলো জেমস-আলী আজমতের কনসার্ট Nov 14, 2025
img
নিরপরাধ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জুলুম করব না : রাশেদ খান Nov 14, 2025
img
এনসিপির হয়ে নির্বাচনের ঘোষণা নুসরাতের Nov 14, 2025
img
পাকিস্তানে বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনীতে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর Nov 14, 2025
img
সন্দেহ আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, হুমা কুরেশির বলিউডে প্রথম পদার্পণ Nov 14, 2025
img
একটা ঘটনাবহুল দিন পার করল বাংলাদেশ : জিল্লুর রহমান Nov 14, 2025
img
বিএনপি রেইনবো সরকার গঠন করবে : টুকু Nov 14, 2025
img
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত : জাহেদ উর রহমান Nov 14, 2025
img
চা বিক্রি করার সময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার Nov 14, 2025
img
শাস্তি হিসেবে জরিমানা গুনল পাকিস্তান Nov 14, 2025
img
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সংবিধান প্রণয়নে সহায়তা করবে ফ্রান্স: ম্যাক্রোঁ Nov 14, 2025
img
শিকড়ের সঙ্গে স্বপ্নও থাকা জরুরি : কৌশিকী চক্রবর্তী Nov 14, 2025
এয়ার টিকিটের দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা কমার দাবি বিমান উপদেষ্টার Nov 14, 2025
img
রাজধানীতে ফের বাড়ল সবজির দাম Nov 14, 2025