যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনা: স্থায়ী কাঠামো গঠনে সম্মতি

গতি ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনায়। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত দুই দিনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে দুই দেশই জানিয়েছে গঠনমূলক অগ্রগতি হয়েছে। আলোচনায় এসেছে দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত পরিকল্পনা, পারস্পরিক অর্থনৈতিক পরামর্শ ও বাণিজ্য ঘাটতি নিরসনের প্রস্তাব।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ও রোববার (১০, ১১ মে) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দল। চীন থেকে নেতৃত্বে ছিলেন ভাইস-প্রিমিয়ার হে লিফেং। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার।

দুই দিনব্যাপী আলোচনায় উঠে এসেছে দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য উত্তেজনার মূলে থাকা ইস্যুগুলো। যুক্তরাষ্ট্র বলছে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যে পদক্ষেপ দরকার, তা এবার বাস্তব ভিত্তি পেয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আলোচনার ধরন ছিল খোলামেলা, গভীর ও গঠনমূলক।
আলোচনার সম্পূর্ণ বিবরণ সোমবার যৌথভাবে প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।

বিবিসি বলছে, দুই দেশই একটি স্থায়ী অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য পরামর্শ কাঠামো গঠনে সম্মত হয়েছে। এই ফোরামের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক ইস্যুগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে এগোনো যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে উভয়পক্ষ।

বৈঠকের সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবহিত করা হয় প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে। ওয়াশিংটনের অবস্থান স্পষ্ট, ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি একটি ‘ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি’, যার সমাধানে এখন প্রয়োজন টেকসই ও ন্যায্য চুক্তি। চীন জানিয়েছে উভয় দেশের স্বার্থে বাণিজ্য সহযোগিতার পরিসর বাড়ানো উচিত, যাতে দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা প্রশমিত হয়।

ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানির দিকে। দুদেশের শুল্ক সংঘাতের প্রেক্ষিতে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকেই চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক চাপায় ট্রাম্প প্রশামন।

এরপর ২ এপ্রিল বিশ্বের বহু দেশের পাশাপাশি চীনা পণ্যের ওপরও আরও ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চীন পাল্টা শুল্ক চাপালে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন এবং মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৪ শতাংশ।

তার সঙ্গে পূর্বের ২০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত হয়ে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। এরপরও থেমে থাকেননি ট্রাম্প। তিনি দফায় দফায় চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে ১২৫ শতাংশ করা হয়। এরপর সেই শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে করা হয় ১৪৫ শতাংশ।

শুল্ক বৃদ্ধি করে পাল্টা জবাব দেয় বেইজিংও। দেশটির কর্মকর্তারা ঘোষণা করেন, ৮৪ নয়, এবার থেকে মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে। পাল্টাপাল্টি শুল্কবৃদ্ধির ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।

শুক্রবার আলোচনা শুরু হওয়ার আগে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছিলেন, ওয়াশিংটন একতরফাভাবে শুল্ক কমাবে না এবং চীনকে অবশ্যই ছাড় দিতে হবে।

আরআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ