দিন দশেক আগেই দীর্ঘ দিনের প্রেমিকার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন লিভারপুলের পর্তুগিজ ফুটবলার দিয়াগো জোতা। দেশ ও ক্লাবের হয়েও মধুর সময় কাটাচ্ছিলেন। ২৮ বছর বয়সী এই তারকার সদ্য সমাপ্ত মৌসুমটা শেষ হয়েছিল দুটি বড় ট্রফি জিতে। লিভারপুলের হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ এবং পর্তুগালের হয়ে জিতেছেন উয়েফা নেশন্স লিগ। জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে দুটি চ্যাম্পিয়ন ট্রফি পাওয়ার সুখস্মৃতি নিয়ে লিগ শেষের ছুটি কাটাচ্ছিলেন জোতা। তবে বিধাতা হয়তো গল্পটা অন্যভাবে লিখে রেখেছিলেন।
স্পেনের জামোরায় আকস্মিক এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন লিভারপুলের পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। তার সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তার ভাই আন্দ্রে সিলভাও। ২৬ বছর বয়সী সিলভাও পেশাদার ফুটবলার ছিলেন। পর্তুগালের দ্বিতীয় স্তরের একটি ক্লাবে খেলতেন তিনি।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্পেনের জামোরা হয়ে উত্তর-পশ্চিমের সান্তান্দার পোর্টের দিকে যাচ্ছিলেন দুই ভাই। সেখান থেকে একটি ফেরি ধরে ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সম্প্রতি ফুসফুসের অস্ত্রোপচার করানোর কারণে চিকিৎসকরা তাকে বিমানে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ বিমানে অভ্যন্তরীণ চাপের কারণে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে গাড়ি। মৃত্যু হয় জোতা ভাইদ্বয়ের।
সিএমটিভির কাছে সাংবাদিক ভিক্টর পিন্টো ব্যাখ্যা করেন, “দিয়াগো জোতা কখনও কখনও সড়কপথে ভ্রমণ করতেন কারণ তার একটি ফুসফুসের সমস্যা ছিল, যদিও সেটা গুরুতর ছিল না। আর আমরা জানি, দক্ষিণ ইংল্যান্ড এবং স্পেনের মধ্যে একটি ফেরি সংযোগ রয়েছে।” ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ওই ফেরিটি ইংল্যান্ডের উদ্দেশে ছাড়ার কথা ছিল।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, দুই ভাই একটি ল্যাম্বরগিনিতে চড়ে বেনাভেন্তে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন, যা দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে। স্থানীয় সময় রাত ১২.৪০ মিনিটের দিকে জামোরা প্রদেশের সানাব্রিয়ার এ–৫২ মহাসড়কে পৌঁছালে হঠাৎই তাদের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুত আগুন ধরে গেলে ভাইসহ নিহত হন জোতা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্কাই স্পোর্টস জানায়, ১১২ নম্বরে ফোন করা হয়েছিল। তারা জানান, গাড়িটিতে আগুন লেগে যায় এবং তা আশেপাশের গাছপালায়ও ছড়িয়ে পড়ে। স্প্যানিশ পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, “দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, একটি ল্যাম্বরগিনি অন্য একটি গাড়িকে ওভারটেক করার সময় চাকার বিস্ফোরণের কারণে রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে। এরপর গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। দুজন নিহত হয়েছে।’
জরুরি পরিষেবাগুলো দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও খেলোয়াড়দের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। গাড়ি পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়ায় নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। পরে গাড়ির নাম্বারপ্লেট দেখে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পর্তুগিজ ফুটবলারের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ ফুটবল দুনিয়া। জাতীয় দল বা ক্লাবের সতীর্থরা ছাড়াও অনেকেই শোক জানিয়েছেন।
এসএন