বিনিময় হার (ডলার-টাকার মূল্য) আরও নমনীয় করার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা মতপার্থক্য শেষ পর্যন্ত সমাধান হয়েছে, এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এতে সম্মত হয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ঋণ দিতে রাজি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে একাধিক বৈঠকের পর এই সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে, যা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, ঋণের কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে আইএমএফ ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এ বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৮% হতে পারে। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি আটকে ছিল। সমঝোতায় পৌঁছানোর ফলে জুনে ঋণের বাকি অর্থ ছাড় করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি, যার মধ্যে ২৩৯ কোটি ডলার বাকি রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে 'ক্রলিং পেগ' নামে একটি নতুন বিনিময় হার পদ্ধতি চালু করেছে, যার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা বেচা-কেনায় আড়াই শতাংশ হারে বাড়ানো বা কমানো যায়। বর্তমানে এই পদ্ধতির মধ্যবর্তী দর ১১৯ টাকা। এই নিয়মে আড়াই শতাংশের পরিবর্তে চার শতাংশ করিডোর দেওয়ার কথা রয়েছে। আইএমএফ-এর সঙ্গে পূর্বে এই নিয়ম নিয়ে মতবিরোধ ছিল, যার কারণে ঋণের কিস্তি আটকে ছিল।
এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আগামীকাল বুধবার আসবে। সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে, এবং গভর্নর দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি এতে অংশ নেবেন।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হয়, এরপর তিনটি কিস্তির অর্থ বাংলাদেশ পেয়েছে। প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পায় ডিসেম্বরে, এবং তৃতীয় কিস্তি ১১৫ কোটি ডলার ২০২৪ সালের জুনে পেয়েছে। মোট তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ ২৩১ কোটি ডলার পায়, এবং বাকি ২৩৯ কোটি ডলার ঋণ অর্থ ছাড়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল। বিনিময় হার নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে এটি সমাধান হচ্ছে।
এসএস/টিএ