‘ঐকমত্য কমিশনের কিছু প্রস্তাব দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জিং’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কিছু প্রস্তাব মানা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জিং। এই বিষয়গুলোতে ঐকমত্য পৌঁছানো খুব দুরূহ ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। তিনি আরও বলেন, মৌলিক বিরোধগুলো বাদ রেখে কাছাকাছি ও আংশিক ঐকমত্য আছে, সেগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছানো যাবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি। বজলুর রশীদ ফিরোজের সঙ্গে দলটির ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নিচ্ছে।

তিনি বলেন, জাতির পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা-যেমন ছিল, যেমন চলছে, সেইভাবে বাংলাদেশ চলতে পারে না। নিশ্চয়ই কিছু না কিছু পরিবর্তন সাধন করতে হবে। পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলো ও দেশের শাসন কাঠামোর মধ্যে যেমন পরিবর্তন করতে হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও তাদের রাজনৈতিক সংগ্রাম, আন্দোলন এবং কর্মকাণ্ডের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে, মানসিকতার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে সমাজ, জনগোষ্ঠী গ্রহণ করবে না। আমরা মনে করি পরিবর্তন অভশ্যম্ভাবী, পরিবর্তন সম্ভব এবং পরিবর্তন করতে হবে।

বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, জাতীয় সনদে সবার অঙ্গীকারের জায়গায় আসত পারব। যদিও আমাদের দেশের ইতিহাসে ঐকমত্য, সনদ অনেক তৈরি হয়েছিল। কারণ সংবিধান মেনে গত ৫৪ বছরে কেউ দেশ পরিচালনা করেনি। সংবিধানে অনেক অসম্পূর্ণতা আছে। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর তিন জোটের রূপরেখা দেশ পরিচালনা করার কথা ছিল, সেটিও পরবর্তীতে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা যাওয়া দলগুলো বাস্তবায়ন করেনি।

ছাত্রদের ১০ দফা, শ্রমিকের পাঁচ দফা, কৃষকের ১০ দফা, নারীদের দফা-- এগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার ছিল, কিন্তু তা মানেননি। সেই জন্য একটা প্রবাদ আছে, চুন খেয়ে মুখ পুড়ে গেলে, দই দেখলেও ভয় লাগে। এখন অঙ্গীকার যতই করি না, মানসিকতার পরিবর্তন না করলে কতটুকু কার্যকর নিয়ে প্রশ্ন থাকে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন, মূল্যবোধ ও চেতনা কতটুকু গড়ে তুলতে পারব, তার ওপর নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে বাস্তবায়ন করবে কি, করবে না। সেই জন্য গণতান্ত্রিক সংগ্রামের প্রতি গুরুত্ব রাখি।

সংস্কার কমিশনগুলো মৌলিক কিছু বিষয় সামনে এনেছে উল্লেখ করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা, মতামত বিনিময়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যেটা বিগত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের বিগত দিনে লক্ষ্য করিনি। সব রাজনৈতিক দলের মতামত জানার চেষ্টা ইতঃপূর্বে পরিলক্ষিত হয়নি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এটিই হলো অগ্রগতি।

মত, দ্বিমত, ভিন্নমত থাকাকে স্বাভাবিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সেটাই গণতন্ত্রের নীতি। আবার মৌলিক কিছু বিষয়ে আমাদের ঐকমত্য লাগবে। সেগুলো দেশ, জাতিকে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

এসএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মেট্রোরেলে ২ ট্রেনের সময়ের ব্যবধান আরও কমছে Dec 01, 2025
img
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ৬ তলা ভবনে আগুন Dec 01, 2025
img
নতুন অপর্ণা হিসেবে শিরীনকে পাশে পেলেন জিতু Dec 01, 2025
img
ব্যর্থ হলে ইন্টেরিম সরকারকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না : মামুনুল হক Dec 01, 2025
img
দীর্ঘদিনের গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে সত্যি সত্যি বিয়ে করলেন সামান্থা Dec 01, 2025
img
ভারতীয় গণমাধ্যমে ইমরান খানের বোনদের সাক্ষাৎকারে নতুন বিতর্ক Dec 01, 2025
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগ, মূল সমন্বয়কারী তাপস: কমিশন Dec 01, 2025
সেন্টমার্টিনে মৌসুমের প্রথম জাহাজ যাত্রা, পর্যটক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ Dec 01, 2025
'আরেকটা পিলখানা হওয়ার সম্ভাবনা আছে' Dec 01, 2025
img
আল্লাহ খালেদা জিয়াকে সম্মান দিয়েছেন: দিপু ভূঁইয়া Dec 01, 2025
img
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার না করার অনুরোধ Dec 01, 2025
img
যাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে ডিবি কার্যালয়ে সাদিক কায়েম Dec 01, 2025
img
ডেঙ্গুতে ১ দিনে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১০ Dec 01, 2025
img
ভোটারই হননি তারেক রহমান, নির্বাচনের প্রার্থী হবেন কিভাবে? Dec 01, 2025
img
নারায়ণগঞ্জে ভুয়া তথ্যে পাসপোর্ট করাতে গিয়ে রোহিঙ্গা যুবক আটক Dec 01, 2025
img
একনেকে ১৬ হাজার কোটি টাকার ১৮ প্রকল্পের অনুমোদন Dec 01, 2025
img
তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে কোনো আইনি বাধা নেই: আসিফ নজরুল Dec 01, 2025
img
খুলনায় ৮ দলের সমাবেশে যোগ দিলেন জামায়াতের আমির ও চরমোনাই পীর Dec 01, 2025
img
বরিশালে জামায়াতসহ ৮ দলের সমাবেশ মঙ্গলবার Dec 01, 2025
img
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান Dec 01, 2025