ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে 'দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল'-এ মামলাটি স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন 'সোচ্চার'-এর ঢাবি শাখা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এই দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাম্য হত্যার তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় তারা মামলাটি 'দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল'-এ হস্তান্তরের দাবি জানান।
এছাড়াও, সংগঠনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করে। নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনে তাদের দাবিগুলো নিম্নরূপ:
বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ ও যান চলাচল শৃঙ্খলা: বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত ব্যক্তিদের প্রবেশে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ এবং পরিচয়পত্র যাচাই বাধ্যতামূলক করা। রিকশা, মোটরসাইকেল ও চার চাকার যানবাহনের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ও সীমিত করা।
রেজিস্ট্রেশন ছাড়া দোকান ও যানচলাচল নিষিদ্ধ: ক্যাম্পাস এলাকার সব দোকান ও যানবাহনকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা। রেজিস্ট্রেশন বহির্ভূত কোনো দোকান বা যানবাহনের কার্যক্রম অনুমোদনযোগ্য নয়।
উন্নত নজরদারি ও নিরাপত্তা অবকাঠামো: সমগ্র ক্যাম্পাসে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো, যাতে সার্বক্ষণিক কার্যকর নজরদারি নিশ্চিত হয়।
ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষের উচ্ছেদ: ক্যাম্পাস থেকে ভাসমান ও ছিন্নমূল ব্যক্তিদের শতভাগ উচ্ছেদ করে পুনর্বাসনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।
অভ্যন্তরীণ রুট নির্ধারণ: ক্যাম্পাসের সবগুলো রাস্তাকে সিটি কর্পোরেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানায় আনা। দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-পলাশী রুট এবং টিএসসি-ফুলার রোড-গণতন্ত্র তোরণ রুটকে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ব্যবহারকারীদের জন্য বরাদ্দ করা এবং বহিরাগত যানবাহনের চলাচল এই রুটে নিষিদ্ধ করা।
মেট্রো স্টেশন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে টহল: ক্যাম্পাসসংলগ্ন মেট্রো স্টেশন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়মিত পুলিশি টহল নিশ্চিত করা এবং উদ্যান এলাকা থেকে মাদকব্যবসা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা।
যানবাহনের গতি ও পার্কিং নিয়ন্ত্রণ: ক্যাম্পাসে যান চলাচলের গতি সীমিত করা এবং বহিরাগতদের পার্কিং ব্যবস্থাকে কঠোর নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা।
২৪/৭ জরুরি সেবা ও রিপোর্টিং প্ল্যাটফর্ম: সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড বা নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতির দ্রুত প্রতিবেদন নিশ্চিত করতে হটলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ২৪/৭ জরুরি নিরাপত্তা সেবা চালু করা।
নারী হলগুলোর জন্য বিশেষ নিরাপত্তা: সুফিয়া কামাল, ফজিলাতুন্নেসা ও মৈত্রী হলের রুটে নিরাপত্তা জোরদার করা। এছাড়া সব নারী হলের আশপাশে নিরাপত্তা টাওয়ার, নিরাপত্তা কর্মী এবং পর্যাপ্ত আলোক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান, সেক্রেটারি প্রত্ন পৃথু বিশ্বাস, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মুনির, জয়েন্ট সেক্রেটারি সাজিদ ইসলাম প্রমুখ।
এসএস/টিএ