এমআরটি লাইন-১: নর্দা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ইউটিলিটি স্থানান্তর কাজ চলছে

বাংলাদেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল প্রকল্প, ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১-এর নর্দা থেকে বিমানবন্দর স্টেশন পর্যন্ত ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, রাস্তা মেরামতের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে ।

প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কাসেম ভূঁইয়া জানান, এমআরটি লাইন-১-এর চুক্তি প্যাকেজ (সিপি) ৫ ও ৬-এর অধীনে নর্দা থেকে বিমানবন্দর স্টেশন পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। সরকার অত্যাধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় যানজট কমানোর লক্ষ্যে এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করছে।

প্রকল্প অনুযায়ী, নগরবাসীর যানজট এড়াতে কর্তৃপক্ষ নর্দা থেকে নতুন বাজার স্টেশন হয়ে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তরের কাজ রাতদিন চলমান রাখবে।

এমআরটি লাইন-১ দুটি অংশে নির্মিত হচ্ছে। একটি বিমানবন্দর রুটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে ১৯.৮৭২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেলপথ তৈরি করা হচ্ছে। এতে ১২টি ভূগর্ভস্থ স্টেশন থাকছে।

অপরটি পূর্বাচল রুটে নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো পর্যন্ত মাটির উপর দিয়ে ১১.৩৬৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেলপথ তৈরি করা হচ্ছে। এতে সাতটি এলিভেটেড ও দুটি ভূগর্ভস্থ স্টেশন থাকছে।

উভয় রুটের নির্মাণ কাজ ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। মোট ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে।

প্যাকেজভিত্তিক বাস্তবায়নের অগ্রগতি:

সিপি-০১-এর অধীনে ২০২৩ সালের ১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ মৌজায় ৩৫.৯০ হেক্টর জমিতে এমআরটি লাইন-১ ডিপো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। এটি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। বাস্তবিক অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৯৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

সিপি-০২-এর প্রাক-চুক্তি আলোচনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। গত ১০ এপ্রিল চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ডিএমটিসিএল সদর দপ্তরে পাঠানো হয়।

সিপি-০৩-এর দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়েছে। আগে যোগ্যতা অর্জনকারী যারা দরপত্র জমা দেয়নি, তাদের জন্য পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়া চলছে।

সিপি-০৪-এর দরপত্রের আর্থিক প্রস্তাব উন্মুক্ত করা হয়েছে। আর্থিক প্রস্তাবের মূল্যায়ন বর্তমানে চলমান রয়েছে।

সিপি-০৫-এর প্রাক-চুক্তি আলোচনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। খসড়া চুক্তির নথিটি গত ১৩ মার্চ জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) কাছে অনাপত্তির জন্য পাঠানো হয়েছে।

সিপি-০৬-এর দরপত্রের আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ন প্রতিবেদন জাইকা থেকে গৃহীত হয়েছে। বর্তমানে প্রথম সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে প্রাক-চুক্তি আলোচনা চলছে।

সিপি-০৭-এর দরপত্রের নথিপত্র উন্মুক্ত করা হয়েছে। দরপত্রের কারিগরি প্রস্তাবের মূল্যায়ন চলছে।

সিপি-০৮-এর দরপত্রের নথিপত্র উন্মুক্ত করা হয়েছে এবং দরপত্রের কারিগরি প্রস্তাবের মূল্যায়ন চলছে।

সিপি-০৯-এর দরপত্রের নথি উন্মুক্ত করা হয়েছে। দরপত্রের কারিগরি প্রস্তাবের মূল্যায়ন প্রতিবেদন সম্মতির জন্য জাইকাতে পাঠানো হয়েছে।

সিপি-১০-এর দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়েছে। দরপত্রের কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়ন প্রতিবেদন সম্মতির জন্য জাইকাতে পাঠানো হয়েছে।

সিপি-১১-এর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিপি-১২-এর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মোট ৫৩ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ এমআরটি লাইন-১ বাস্তবায়ন করছে। এতে জাইকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ১৪ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, এই মেট্রোরেলে প্রতিদিন ১৩.৬৬ লাখ মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন, যা বিদ্যমান এমআরটি লাইন-৬-এর চেয়ে প্রায় ২.৮৩ গুণ বেশি।

তারা বলেন, সরকার যানজট কমাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় ১৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক তৈরির মেগা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

ছয়টি লাইনের পরিকল্পিত নেটওয়ার্ক বাস্তবে রূপ নিলে ৫০ লাখ মানুষ এই সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারবে। এ লাইনগুলো শহরের ১২৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হবে। এর মধ্যে প্রায় ৬৮ কিলোমিটার এলিভেটেড এবং প্রায় ৬১ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ। এতে শতাধিক স্টেশন থাকবে।


এসএস/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ অবিলম্বে বাতিলের দাবি Dec 02, 2025
img
মরিসন-ওয়াকার থাকছেন ধারাভাষ্যে, শুরু হচ্ছে জাঁকজমকপূর্ণ বিপিএল Dec 02, 2025
img
কঠিন সময়েও সৎ থাকা জরুরি: দেব Dec 02, 2025
img
শ্রেয়াস আইয়ারকে ঘিরে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন অভিনেত্রী ম্রুণাল ঠাকুর Dec 02, 2025
img
৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট Dec 02, 2025
img
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জাককানইবির ১৬ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা বহিষ্কার Dec 02, 2025
img
মায়ের মৃত্যুর পর অনধিকারচর্চায় ভেঙে পড়েছিলেন জাহ্নবী Dec 02, 2025
img
সাংবাদিক পরিচয় নয়, আচরণ দেখুন: জয়া বচ্চন Dec 02, 2025
img
খালেদা জিয়ার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক Dec 02, 2025
img
টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন তানজিদ তামিম Dec 02, 2025
img
সন্তানদের নয়, ধর্মেন্দ্র যাদের দিয়ে গেলেন কোটি টাকার সম্পত্তি! Dec 02, 2025
img
আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পেশাদার বাহিনী গড়ার প্রতিশ্রুতি সেনাপ্রধানের Dec 02, 2025
img
আয়ারল্যান্ডকে ১১৭ রানে অলআউট করল বাংলাদেশ Dec 02, 2025
img

জয়া আহসান

ঘুম থেকে উঠে মুখ না ধুয়ে চলে এসেছি Dec 02, 2025
img
এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৮ টাকা Dec 02, 2025
img
৭ ডিসেম্বরের পর যেকোনো দিন তফসিল ঘোষণা : ইসি আনোয়ারুল Dec 02, 2025
img
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি করবে, খুবই আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র Dec 02, 2025
img
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও ভুয়া শিক্ষার্থী আটক Dec 02, 2025
img
বাড়িভাড়া নির্ধারণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল Dec 02, 2025
img
ফিফা আরব কাপে কাতারকে ১–০ গোলে হারিয়েছে ফিলিস্তিন Dec 02, 2025