রাজনীতিবিদদের তিস্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে ভারত যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই বাংলাদেশ চালিয়েছে। কিন্তু এখন আমরা সেভাবে আর চলতে চাই না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও ভারত আমাদের শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না। কী কর্মসূচি হাতে নিলে তিস্তার পানি আমরা পেতে পারি তা নিয়ে ভাবতে হবে। পাকিস্তানের মতো আমাদের এটমবোম বা মিসাইল নেই যে ভয় দেখিয়ে পানির নায্য হিস্যা আদায় করতে পারব।
শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে ৪৯তম ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য মান্না এসব কথা বলেন।
ফারাক্কা নদীর চুক্তির মেয়াদ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়ে যাবে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘ফারাক্কা চুক্তিতে ভারতের ৪৪ হাজার কিউসেক পানি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চুক্তির পর ধীরে ধীরে ভারত পানির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আগামী ফেব্রুয়ারির পর ভারত আবার নতুন করে চুক্তি নবায়ন করবে। সরকার করবে কি না জানি না। এবার চুক্তি হবে না। পত্রিকা বা টেলিভিশনে কোথাও কেউ কেন কিছু লিখছে বা বলছে না কেন?’
তিনি বলেন, ভারত সরকার যদি ড. ইউনূসের সঙ্গে ফারাক্কা নিয়ে দেখা বা কথা না বলে, চুক্তি করতে রাজি না হয়, তাহলে কীভাবে তাকে বাধ্য করবে। অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে জাতিসংঘের আইনকানুন আছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, সেই বিধান আমাদের দেশের জন্য কার্যকর নয়। আমরা আন্তর্জাতিক কোনো আইনে স্বাক্ষর করিনি, ভারত ও চীন করেনি।
চীন থেকে তিস্তা নদীর উপত্তি হয়েছে। ভারত অভিযোগ করে, চীন তিস্তার অনেক জায়গায় বাঁধ দিয়েছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে পারে না ভারত। আবার ভারত আমাদের ওপর তিস্তা নিয়ে বঞ্চনা করছে। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে সবার সঙ্গে কথাবার্তা বলে সচেতনভাবে দেশ চালানোর অনুরোধ জানান মান্না।
তিনি বলেন, সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দিলে তাদের হাতে চলে যাবে। ইন্টারনেট বিদেশি স্টারলিংক কোম্পানির হাতে দিয়েছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভারতের কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্য সম্মান, অধিকার, দাবি আদায় করতে হলে শক্তি ও শান্তির কোনো বিকল্প নেই। পানির ন্যায্য হিস্যা শুধু মিছিল ও মিটিং করে আদায় করা যাবে না। কূটনীতিক বিজয় দিয়ে পারব তা-ও না। শক্তি ও শান্তি এই দুটোই মাথায় নিয়ে যদি আমরা সামনে চলতে পারি তাহলে ভারতের কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্য দাবি আদায় করা সম্ভব হবে।
ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।
আরএম