ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে 'বিশ্বের সেরা বিক্রেতা' বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমি মনে করি জেলেনস্কি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিক্রেতা, আমার চেয়ে অনেক ভালো। তিনি ওয়াশিংটনে আসেন - প্রতিবারই একশ মিলিয়ন ডলার নিয়ে বেরিয়ে যান।
শুক্রবার (১৬ মে) সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ফক্স নিউজের উপস্থাপক ব্রেট বেয়ারের এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি উদ্বিগ্ন যে, ইউক্রেনকে সাহায্যের জন্য কোটি কোটি ডলার 'অপচয়' করা হচ্ছে।
উপস্থাপক ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি কি বিশ্বাস করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে 'শান্তির পথে বাধা'? ট্রাম্প এ নিয়ে কথা বলার পরিবর্তে ইউক্রেনীয় নেতা ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, জেলেনস্কির সাথে আমার খুব একটা খারাপ সময় কেটেছে, কারণ তার কথা আমার পছন্দ হয়নি। সে ব্যাপারটা সহজ করছিল না। আর আমি সবসময় বলেছি যে, তার কাছে কোনো 'কার্ড' নেই।
ট্রাম্প তার পূর্বসূরী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কিয়েভে পাঠানো সাহায্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, টাকা তো টাকাই। আমাকে বিরক্ত করেছিল - এটা যেভাবে ছিল তা দেখে আমার ঘৃণা হচ্ছিল, তুমি জানো - ক্ষমা করবেন - রেগে গিয়েছিলাম। ৬০ বিলিয়ন ডলারের চেক দেখে আমার ঘৃণা হচ্ছিল। কংগ্রেস এটা নিয়ে খুবই বিরক্ত। জানো, তারা বলছে, এই সব টাকা কোথায় যাচ্ছে?
জেলেনস্কির আমেরিকান সাহায্যের জন্য লবিং করার ক্ষমতা সময়ের সাথে সাথে আরও 'সঙ্কুচিত' হচ্ছে বলেও মনে করেন ট্রাম্প।
২০২২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে প্রায় ১২৮ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে, যার মধ্যে ৬৬.৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তাও রয়েছে।
যদিও ট্রাম্প অতীতে জেলেনস্কি এবং পুতিন উভয়েরই সমালোচনা করেছেন, তবে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাতের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইউক্রেন এবং বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করেছেন।
ফেব্রুয়ারিতে ওভাল অফিসে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের সময় ট্রাম্প জেলেনস্কিকে মার্কিন সমর্থনের জন্য 'অকৃতজ্ঞ' বলে অভিযুক্ত করেন এবং দাবি করেন, ইউক্রেনীয় নেতা 'তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন'।
তবে এরপর থেকে তিনি ইউক্রেনের প্রতি তার বক্তব্য নরম করেছেন এবং শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে মস্কোর ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
এর আগে, গতকাল শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা সরাসরি আলোচনায় বসেছে। রাশিয়ার আলোচক দলের প্রধান ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেছেন, উভয় পক্ষই এক হাজার যুদ্ধবন্দীকে ফিরিয়ে দেওয়ার একমত হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি পক্ষ একটি বিস্তারিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রস্তুত করার পরে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়েও একমত হয়েছে।
টিকে/এসএন