কিশোরগঞ্জের গোরখোদক মনু মিয়ার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ঘোড়াটিকে কে বা কারা যেন মেরে ফেলেছে। ৩ হাজার ৫৭টি কবর খোঁড়া মনু মিয়াকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
খবরটি নজরে এলে সেই মনু মিয়াকে ঘোড়া কিনে দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন অভিনেতা খায়রুল বাশার। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তিনি অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি।এরপর তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান অভিনেতা। সেখানে দীর্ঘ আলাপ হয় তাদের মধ্যে।
খায়রুল বাশার বলেন, “তিন হাজারের বেশি কবর খুঁড়েছেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করেছেন নিজের ঘোড়া।সেই ঘোড়াটিকে দুর্বৃত্তরা মেরে ফেলার কথা শুনে তার সঙ্গে দেখা করতে যাই। কথার এক পর্যায়ে তাঁকে বলি, ‘একটি ঘোড়া আপনাকে কিনে দিতে চাই।’ কিন্তু তিনি ঘোড়া নিতে চান না। কোনোভাবেই তাকে রাজি করাতে পারিনি; বরং তিনি বারবার এটাই জানিয়েছেন, সুস্থ হয়ে বাড়ি গেলে সাতটা ঘোড়া কিনতে পারবেন।
ঘোড়া মারা যাওয়ার কথা শুনে আহত হননি মনু মিয়া। এতেও অবাক হয়েছেন অভিনেতা। বাসার জানান, ঘোড়া মারা যাওয়া নিয়ে তার মধ্যে কোনো দুঃখবোধ নেই। তিনি মনে করেন, তার আছে বলেই গেছে। যার আছে, তার যায়।
এতে কষ্ট হচ্ছে না।
বাশার বললেন, ‘এই মনু মিয়ার সঙ্গে আলাপ হওয়ায় বুঝতে পারলাম, তিনি কারো অনুদান নিতে চান না। সাধ্যের মধ্যেও অনেক কষ্টে তিনি ঘোড়া কিনেছেন। তিনি কোনো দিন কারো কোনো ক্ষতি করেননি। মনু মিয়ার জীবনযাপন মুগ্ধ করেছে আমাকে।’
মনু মিয়া ও বাশার দুজনেই কিশোরগঞ্জের মানুষ। বাশারের মনে হয়েছে, মনু মিয়া বয়স অনুযায়ী বেশ শক্ত। মানসিকভাবেও দৃঢ়চেতা। এ ধরনের মানুষ সহজেই ভেঙেন পড়েন না। তবে কথার এক পর্যায়ে মনু মিয়া ‘হতাশ’ করেন এই অভিনেতাকে। সেটাও বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেন এই অভিনেতা।
এমএর/টিএ