মে মাসেই নৌকাডুবিতে ৪২৭ রোহিঙ্গার মৃত্যু: জাতিসংঘ

মিয়ানমার ও বাংলাদেশে ভয়াবহ মানবিক সংকটের কারণে আরও রোহিঙ্গা নিরাপদ জীবনের খোঁজে ঝুঁকিপূর্ণ নৌযাত্রায় ঝুঁকছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। শুক্রবার (২৩ মে) সংস্থাটি বলেছে, গত এক মাসে নৌকাডুবির ঘটনায় ৪২৭ জনের মতো মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘ আরও বলেছে, সহায়তা তহবিল কমায় হয়তো এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এমন ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।

রয়টার্স লিখেছে, রাশিয়া ও চীন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে প্রধান দাতারা, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে বেশি বিনিয়োগ করতে গিয়ে মানবিক খাতের তহবিল কমিয়ে দিয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনইএচসিআর জানিয়েছে, গত ৯ ও ১০ মে ডুবে যাওয়া দুই নৌকায় ৫১৪ জন রোহিঙ্গা ছিলেন, যারা বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রওনা দিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে মাত্র ৮৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেছে। ৪২৭ জনের সম্ভাব্য মৃত্যু রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এ বছরের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা।

ইউএনএইচসিআর বলছে, বর্ষা মৌসুমে প্রবল বাতাস ও উত্তাল সমুদ্রের মধ্যে নৌযাত্রা বেছে নেওয়াকে রোহিঙ্গাদের ‘মরিয়া পরিস্থিতির’ প্রতিফলন তুলে ধরে।

সংস্থাটির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক ব্যুরোর পরিচালক হাই কিয়াং জুন বলেন, তহবিল কমার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছে; এই ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের জীবনে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলছে। যার ফলে নিজেদের ও পরিবারের জন্য নিরাপদ, সুরক্ষিত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের সন্ধানে তারা আরও বিপজ্জনক যাত্রা করতে বাধ্য হচ্ছে।

বাংলাদেশসহ আশ্রয়দানকারী দেশগুলিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনকে স্থিতিশীল করতে এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুতদের জন্য আরও আর্থিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। ২০২৫ সালে তাদের জন্য ৩৮৩.১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা অনুরোধ করা হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশ পূরণ হয়েছে।

২০২৪ সালে ইউএনএইচসিআর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান পেয়েছে, যা তাদের মোট অনুদানের ৪০ শতাংশ।

ইউএনএইচসিআরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, খরচ কমানোর অংশ হিসেবে তারা মার্চ মাসে ৩০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি পূর্বপরিকল্পিত কার্যক্রম স্থগিত করেছেন।

এফপি/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আগামী বছরের ৩০ জুন মধ্যে নির্বাচনে সমর্থন দিয়েছে জামায়াত-এনসিপি, জানালেন প্রেস সচিব May 24, 2025
img
বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট যেন সোনার হরিণ May 24, 2025
img
৪০ বছর ধরে সঞ্চয় করে হজে গেলেন ইন্দোনেশিয়ান দম্পতি May 24, 2025
img
হামজাদের স্বপ্নভঙ্গ করে প্রিমিয়ার লিগে সান্ডারল্যান্ড May 24, 2025
img
‘রাষ্ট্রের স্বার্থেই সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া উচিত’ May 24, 2025
img
মুস্তাফিজের রেকর্ড গড়া বোলিং, তবুও বড় সংগ্রহ পাঞ্জাবের May 24, 2025
দায়িত্ব পালন অসম্ভব করে তুললে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার May 24, 2025
১৭ ছাপাখানা, ৩৫৫ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি! May 24, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৫ দাবি জানাল এনসিপি May 24, 2025
img
অব্যাহতিপ্রাপ্ত নারী সমন্বয়ক ফের দলে, থাকবেন কার্যক্রমে May 24, 2025
img
ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ১৫ May 24, 2025
img
পুলিশের থেকে হাতকড়াসহ আ. লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল জনতা May 24, 2025
দুই উপদেষ্টা প্রসঙ্গে নাহিদ চরম মিথ্যা বলেছেন: রাশেদ খান May 24, 2025
দেব-শুভশ্রীর প্রেমে ফাটল! আসল কারণ কী? May 24, 2025
'মাই কিং' শাকিব খান, এক রাজাকে ঘিরে দুই রানির রহস্যময় বার্তা!' May 24, 2025
img
‘বাংলাদেশের জন্য মারণফাঁদ ফারাক্কা’ May 24, 2025
img
সহায়তার ঘাটতিতে দুর্ভিক্ষের শঙ্কায় গাজা May 24, 2025
img
আজও কোনো আশ্বাস পাইনি : নির্বাচন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন May 24, 2025
img
যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া সম্পদ জব্দের প্রথম পদক্ষেপে টিআইবির সাধুবাদ May 24, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার কাছে সংস্কার ও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত May 24, 2025