দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি সোনার খনিতে আটকে পড়া ২৬০ শ্রমিককে সফলভাবে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) খনির লিফট ভেঙে যাওয়ায় তারা নিচে আটকা পড়ে যান। তবে একদিন পর, শুক্রবার (২৩ মে) খনি থেকে সবাইকে নিরাপদে উপরে তুলে আনা সম্ভব হয়। খবর এএফপির।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্ধার শ্রমিকরা ক্লোফ নামের ওই স্বর্ণখনিতে কর্মরত ছিলেন। খনিটি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান জানায়, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে প্রথম ধাপে ৭৯ শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। এরপর ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে বাকি ১৮১ জনকেও জীবিত অবস্থায় উপরে আনা হয়।
কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধার অভিযানের সময় কোনো শ্রমিক আহত হননি। চাইলে শ্রমিকরা খনির জরুরি বহির্গমন পথ ব্যবহার করতে পারতেন, তবে সেটি ছিল দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য। ফলে উদ্ধার টিমের সহায়তায়ই সবাইকে নিরাপদে উপরে আনা হয়।
ঘটনার পরপরই শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা খনির বাইরে জড়ো হন এবং উদ্বেগের মধ্যে স্বজনদের খবরের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। খনি কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করে জানিয়েছে, প্রয়োজন হলে প্রত্যেক শ্রমিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং তাদের পরিবারের জন্য সহায়তা প্রদান করা হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় খনি শ্রমিক ইউনিয়ন জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শ্রমিকরা আটকে পড়েন। প্রায় ২০ ঘণ্টা পরও তাদের উদ্ধারে গতি না দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউনিয়নটি।
অন্যদিকে খনি কোম্পানিটি শুরু থেকেই দাবি করে আসছিল যে, শ্রমিকরা বিপদে পড়েননি, কারণ তারা খনির অস্থায়ী নিরাপদ উপকেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ খনিজ রপ্তানিকারক দেশ। দেশটির বহু মানুষ খনি খাতে কর্মরত। তবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় দেশটির খনিগুলোতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার খনিগুলোতে ৫৫ জন এবং ২০২৪ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৪২ জন শ্রমিক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
এ ঘটনার সফল পরিসমাপ্তি শ্রমিক ও পরিবারের জন্য যেমন স্বস্তির, তেমনি খনির নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবনার সুযোগ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরআর