বলিউডের ঝলমলে রঙিন দুনিয়া বাইরে থেকে যতই মোহময় মনে হোক, ভেতরে রয়েছে নানা অন্ধকার দিক। গ্ল্যামার, খ্যাতি আর সাফল্যের এই যাত্রায় অনেক অভিনেত্রীকেই পেরোতে হয়েছে লাঞ্ছনা, অবহেলা ও আপোষের কঠিন পথ। কাস্টিং কাউচ, শ্রেণী বৈষম্য, নেপোটিজম থেকে শুরু করে মানসিক নিপীড়ন—সব মিলিয়ে বলিউডের অন্দরমহল নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে।
নার্গিস ফাখরি: “খ্যাতির জন্য নগ্নতা নয়”
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলিউড অভিনেত্রী নার্গিস ফাখরি সরাসরি বলেন, তাকে পরিচালকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, "খ্যাতির জন্য নগ্ন হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো বা পরিচালকের শয্যাসঙ্গিনী হওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। তাই বহু কাজ হারিয়েছি। তবু আপোষ করিনি।"
তাপসী পান্নু: “আমি প্রথম সারির নায়িকা নই, তাই বাদ!”
তাপসী পান্নু প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তার পারিশ্রমিক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিকবার। এমনকি চুক্তিবদ্ধ ছবিতে কাজ পাওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তাকে বাদ দিয়ে বড় নায়িকার হাতে চরিত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। “নায়ক রাজি হয়নি আমার সঙ্গে কাজ করতে, কারণ আমি ‘টপ হিরোইন’ নই”—বলেছিলেন তাপসী।
কঙ্গনা রানাওয়াত: “বলিউডে মানসিক যুদ্ধ লড়তে হয়”
কঙ্গনা বরাবরই বলিউডের অন্ধকার দিক নিয়ে সরব। নেপোটিজম, কাস্টিং কাউচ কিংবা ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান স্পষ্ট। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "নায়িকাদের লড়াই কেবল পরিশ্রমের নয়, মানসিকভাবেও নিজেকে বারবার প্রমাণ করতে হয়। এতে অনেক সময় নিজের সত্তাও হারিয়ে যায়।"
রিচা চাড্ডা: “আপোষ করতে হয়, না করলে বাদ!”
রিচা চাড্ডা ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে বলেন, “বলিউডে এমন অনেক কিছু করতে বলা হয়, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু আপনাকে সেটা বিশ্বাস করিয়ে দেওয়া হয় যে, এটা না করলে কেরিয়ার এগোবে না।”
এই অভিনেত্রীদের অভিজ্ঞতা স্পষ্ট করে দেয়—বলিউডে কাজ পাওয়া মানে শুধু অভিনয় নয়, লড়াই, আত্মসম্মান রক্ষা আর বারবার নিজেকে প্রমাণ করা। আলো ঝলমলে দুনিয়ার আড়ালে এই তিক্ত বাস্তবতা আজ সামনে আসছে সাহসী কিছু মুখের কল্যাণে।
এমআর/টিএ