ভুয়া পরিচয় দিয়ে প্রায় ১২ বছর বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত থাকার পর একজন ব্যক্তি ধরা পড়েছেন। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তার নিয়োগ সম্প্রতি বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সময় সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) মো. আব্দুল ওয়ারেস আনসারীর পরিচয় ও তথ্য ব্যবহার করে 'ওয়ারেস আনসারী' সেজে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসে যুগ্ম পরিচালক হিসেবে কর্মরত এক ব্যক্তি ধরা পড়েছেন। তিনি ২০১৩ সালের ২২ জুলাই সহকারী পরিচালক (সাধারণ) হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দিয়েছিলেন।
বিষয়টি নজরে আসায় অভিযুক্তের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে আরিফ হোসেন বলেন, প্রায় ১২ বছর পর গত মঙ্গলবার ভুয়া আনসারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আরও কেউ এমন সুযোগ নিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে।
জানা যায়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি হয় মো. আব্দুল ওয়ারেস আনসারীর। তবে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দিয়ে যোগ দেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। নিয়োগ পেয়েও মো. আব্দুল ওয়ারেস আনসারী বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দেয়ায় সেই সুযোগটিকে কাজে লাগান বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিঞা।
আব্দুল ওয়ারেস আনসারীর জায়গায় নিজের ভাগনেকে নিয়োগ দেন মো. শাহজাহান। এ জন্য ভাগনের নাম বদলে আব্দুল ওয়ারেস আনসারী রাখা হয়। আবদুল ওয়ারেস আনসারী নামে শাহজাহান মিঞার ভাগনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকরি করেন ১২ বছর, দুটি পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন যুগ্ম পরিচালক। সম্প্রতি এক তদন্তে এই তথ্য বেরিয়ে আসার পর মো. শাহজাহান মিঞাকে বরখাস্ত ও তার ভাগনের নিয়োগ বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নারায়ণগঞ্জের এডিসি আবদুল ওয়ারেস আনসারী এ বিষয়ে সময় সংবাদকে জানান, ‘সম্প্রতি এই প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর আগে আমি জানতাম না যে, আমার পরিচয়ে কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করছে।’
তিনি আরও বলেন, 'আমি ২০১৩ সালে ৩১তম বিসিএস এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। পরে বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিভিল সার্ভিসে যোগ দেই। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তি।'
আরএ/টিএ