দেশের চারটি দাখিল মাদ্রাসার প্রধানদের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম, জাল সনদ ব্যবহার এবং অযোগ্য প্রার্থীদের এমপিওভুক্তির চেষ্টা করার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিএমই)।
সম্প্রতি চারটি পৃথক চিঠিতে এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে এমপিও নীতিমালা ১৮ দশমিক ১ (গ) ও (ঙ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আগে ১৬ ও ১৭ জুনের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ডিএমই সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা, যশোর, ময়মনসিংহ ও ভোলা জেলার সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাগুলোতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয় এবং একাধিকবার এমপিওর জন্য আবেদন করা হয়েছে, যদিও আবেদনকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাদ্রাসা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী ছিল না।
এরমধ্যে গাইবান্ধার মনোহরপুর আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. আবদুল জলিল একাধিকবার সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) পদে লাকী বেগম নামের একজন অযোগ্য প্রার্থীর জন্য নতুন এমপিও আবেদন পাঠান। যদিও তাকে আগেই এমপিও নীতিমালা অনুসারে এ ধরনের আবেদন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
যশোরের বাজেদুর্গাপুর দাখিল মাদ্রাসা ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. হাসানুজ্জামান জাল ও অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ইবতেদায়ী প্রধান, কারি ও অফিস সহকারী পদে তিনজন কর্মচারীর এমপিওর জন্য জুন ২০২৩ ও মে ২০২৫ সালে আবেদন করেন।
ময়মনসিংহের বাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. বুরহান উদ্দিন এনটিআরসিএ’র ভুয়া ও জাল সনদপত্র দিয়ে দুই শিক্ষক—শাকিল ও সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়োগ দিয়ে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মে ২০২৫-এ এমপিওর আবেদন করেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হতে পারে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, ভোলার দক্ষিণ জয়নগর রহিমা বেগম ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. নূরুল আমিন সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) হিসেবে জনাব ইউনুসের জন্য ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৫ সালের বিভিন্ন মাসে বারবার এমপিও আবেদন পাঠান, যদিও তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ও এমপিও বাছাই ও অনুমোদন কমিটির সদস্য সচিব মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ধরনের অনিয়ম সরকারি অর্থ অপব্যবহারের শামিল। এ কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এমপিও স্থগিতসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
এর আগে, আরও পাঁচ মাদ্রাসা প্রধানকে এমপিও নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এরমধ্যে রয়েছেন — গাইবান্ধার চকশালাইপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. সাখাওয়াত হোসেন, লালমনিরহাটের আউলিয়ারহাট কাজী নিজামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আছাদুজ্জামান, রংপুরের ভাংনী আহমদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোফরান আলী ওয়াহেদী, খুলনার বেজপাড়া হায়াতুন্নেচ্ছা দাখিল মাদ্রাসার সুপার এ কে এম আজহারুল ইসলাম। এদের বিরুদ্ধেও অযোগ্য প্রার্থীর পক্ষে একাধিকবার এমপিও আবেদন ও জাল কাগজপত্র ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেছে। এসব ঘটনায়ও শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
এসএম/টিএ