বান্দরবানে টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধস ও বন্যার আশঙ্কা

বান্দরবানে টানা দুই দিনের ভারি বর্ষণ জনজীবনে চরম দুর্ভোগ ডেকে এনেছে। থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়া ও মুষলধারে বৃষ্টির ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধস ও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার বাসিন্দারা রয়েছেন চরম আতঙ্কে, বিশেষ করে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত পরিবারগুলো ঘুমহীন অবস্থায় রাত কাটাচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার (৩০ মে) দুপুর ১১টা পর্যন্ত লাগাতার বৃষ্টিপাতে বান্দরবানের বনরূপা, হাফেজঘোনা, মেম্বার পাড়াসহ বেশ কিছু নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

বান্দরবান-রুমা সড়কের মুরুং বাজার ও খুমী পাড়া এলাকায় পাহাড় ধসের কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে জেলা সদরের সঙ্গে রুমা উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া জেলার আরও বেশ কিছু স্থানে পাহাড় ধসের কারণে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক মাইকিং অব্যাহত রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বসবাসরত মানুষদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২২২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: বান্দরবান সদরে ৪৬ টি, রুমা উপজেলায় ২৮ টি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৯, থানচিতে ১৫, লামায় ৫৫, আলীকদমে ১৫ এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় - ৪২ টি সহ সর্বমোট ২২০ টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর ফলে জেলার নিচু এলাকাগুলোতে পানি জমে গেছে এবং পাহাড় ধসের সম্ভাবনা বাড়ছে।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা সরাসরি মাঠে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

তিনি বলেন, “সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে পাহাড়ের পাদদেশে যারা বসবাস করছেন, তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে অনুরোধ করা হচ্ছে।”

আরএম  

Share this news on:

সর্বশেষ

img
এক বিড়ালই স্বরা-ফাহাদকে নিয়ে যায় বিয়ের পিঁড়িতে! Sep 15, 2025
img
ভারত থেকে ২০০ নতুন কোচ কিনছে বাংলাদেশ রেলওয়ে Sep 15, 2025
img
ডাকসুর পর জাকসুতেও জিতল এক দম্পতি Sep 15, 2025
img
১৫ বছর বয়সে ইতিহাস গড়লেন ওয়েন কুপার Sep 15, 2025
img
ভাঙ্গায় যান চলাচল স্বাভাবিক, রাস্তার পাশে আন্দোলনকারীদের অবস্থান Sep 15, 2025
img
টিকটক নিয়ে আলোচনা এখনও চলমান, ফলাফল নির্ভর করছে চীনের ওপর: ট্রাম্প Sep 15, 2025
img
রাকসু হল সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩৯ জন নির্বাচিত Sep 15, 2025
img
আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (১৫ সেপ্টেম্বর) Sep 15, 2025
img
বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্ক, এরদোয়ান সরকারের পদত্যাগ দাবি Sep 15, 2025
img
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষে প্রথম রিলিজ স্লিপের ফল প্রকাশ বিকেলে Sep 15, 2025
img
ন্যাটো জোটের মতো সামরিক বাহিনী গড়ে তুলতে চায় মিশর Sep 15, 2025
img
ইসলামি দেশগুলোকে সামরিক জোট গঠনের আহ্বান ইরাকের Sep 15, 2025
img
বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ভেনেজুয়েলা Sep 15, 2025
img
মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির নামে ১১৫৯ কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ-পাচার’ Sep 15, 2025
img
বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার নদীর পানি, খুলে দেওয়া হয়েছে ব্যারাজের সব কটি জলকপাট Sep 15, 2025
img
কাতার ইস্যুতে ইসরাইলকে খুব সতর্ক হতে হবে, বললেন ট্রাম্প Sep 15, 2025
img
আমরা কখনোই আমাদের পতাকা সমর্পণ করব না: স্টারমার Sep 15, 2025
img
ভ্যালেন্সিয়াকে ৬-০ গোলে বি-ধ্ব-স্ত করলো বার্সা Sep 15, 2025
img
আমালের বিরুদ্ধে বাজে স্পর্শের অভিযোগ, মীমাংসায় উলটো বিপাকে অভিনেত্রী Sep 15, 2025
img
গাইবান্ধায় বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল শ্রমিকের, আহত ৩ Sep 15, 2025