নেতানিয়াহুর দেশকে ঠেকাতে ছেলেকে পাঠিয়ে ইরানকে সতর্ক করল সৌদি বাদশা!

মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য সংঘাত ঠেকাতে সৌদি আরব একটি কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে। ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক সমঝোতায় পৌঁছাতে ইরানকে সতর্ক করে দিয়েছেন সৌদির বাদশা সালমান বিন আব্দুলআজিজ।

এ বার্তা তার ছোট ছেলে ও দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের মাধ্যমে সরাসরি তেহরানে পৌঁছে দেওয়া হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত ১৭ এপ্রিল তেহরানে ইরানের প্রেসিডেন্ট ভবনে এক গোপন বৈঠকে এ বার্তা পৌঁছে দেন প্রিন্স খালিদ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান, সেনাপ্রধান মোহাম্মদ হোসেইন বাঘেরি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।

সৌদি ও ইরানি সূত্র জানায়, বাদশা সালমান উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত পরমাণু চুক্তিকে গুরুত্ব না দেয়, তবে দেশটি ইসরায়েলি সামরিক হামলার মুখে পড়তে পারে। গোপন এ বার্তায় সৌদি বাদশা আরও ইঙ্গিত দেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধৈর্য সীমিত এবং তিনি দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছাতে চান।

সূত্রগুলো জানায়, খালিদ বিন সালমান ইরানকে সরাসরি সতর্ক করে বলেন, যদি কূটনৈতিক আলোচনার পথ বন্ধ হয়ে যায়, তবে ইসরায়েল তেহরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় ইরানের মিত্র হামাস ও হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়েছে। সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে আঞ্চলিকভাবে ইরানের অবস্থানও তুলনামূলকভাবে দুর্বল। এই প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব তাদের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।

কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টার-এর ইরান বিষয়ক বিশ্লেষক মোহনাদ হেজ আলি বলেন, তেহরানের দুর্বলতা সৌদি আরবকে কূটনৈতিকভাবে প্রভাব খাটানোর সুযোগ দিয়েছে। সৌদি আরব স্পষ্টভাবে যুদ্ধ এড়াতে চায়, কারণ তা তাদের অর্থনীতি ও ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার ওপর বড় আঘাত হানতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে চীনের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ বছরের তিক্ততা পেরিয়ে সৌদি আরব ও ইরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে। তবে দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাসের সংকট এখনো পুরোপুরি কাটেনি। তাই তেহরানে প্রিন্স খালিদের সফরকে অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখছেন।

এ বিষয়ে সৌদি আরব কিংবা ইরান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

আরএম   

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে শিল্প মালিক প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ Sep 16, 2025
img
মিয়ানমারে অবৈধভাবে পণ্য পাচারের সময় ১১ জনকে আটক করেছে নৌবাহিনী Sep 16, 2025
img
চবিতে ‘হোস্টেল সংসদ’ নির্বাচনের ঘোষণা Sep 16, 2025
img
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ Sep 16, 2025
img
বিশ্ববাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম Sep 16, 2025
img
দুই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে শ্রীলঙ্কা, খালি হাতে বিদায় নিল হংকং Sep 16, 2025
img
ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় বৃদ্ধি করল এনবিআর Sep 16, 2025
img
ইভ্যালি থেকে বেরিয়ে একই কৌশলে প্রতারণা, নারী গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
এশিয়া কাপ জিতেনি বাংলাদেশ গুগোল করে নিশ্চিত হলেন ট্রট Sep 16, 2025
img
ড. ইউনূস ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনষ্ট হবে : রাশেদ খান Sep 16, 2025
img
ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি গণনার জন্য উমামার লিখিত আবেদন Sep 16, 2025
img

মাসুদ সাঈদী

জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন, তাহলে নির্বাচন বর্জনের দরকার হবে না Sep 16, 2025
img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025