মরক্কোয় রাজার নির্দেশে প্রতীকী কুরবানি উদযাপন

প্রায় ছয় দশক পর ফের পশু কুরবানি স্থগিত করল উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশ মরক্কো। এবারের ঈদুল আজহায় পশু জবাই না করার আহ্বান জানানো হয়েছে দেশটির রাজা মোহাম্মদ ষষ্ঠ-এর পক্ষ থেকে।এই পদক্ষেপ এসেছে গভীর অর্থনৈতিক সংকট, ভয়াবহ খরা ও পশুর দামে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে। রাজা ঘোষণায় বলেন, 'বর্তমান দুঃসময় সাধারণ জনগণের ওপর যে বোঝা তৈরি করেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কুরবানির ধর্মীয় রীতি স্থগিত রাখাই সবচেয়ে বেশি মানবিক।'

রাজপ্রাসাদ থেকে প্রকাশিত এক চিঠিতে জানানো হয়, রাজার পক্ষ থেকেই এবার কুরবানি সম্পন্ন হবে, যা দেশের জনগণের পক্ষ থেকে প্রতীকী কুরবানি হিসেবে বিবেচিত হবে। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।

এমন সিদ্ধান্ত মরক্কোর ইতিহাসে একেবারে নতুন নয়। প্রয়াত রাজা হাসান দ্বিতীয় ১৯৬০-এর দশকে তিনবার ঈদুল আজহার কুরবানি স্থগিত করেছিলেন — যার মধ্যে একটি ১৯৬৩ সালের স্যান্ড ওয়ার বা বালুর যুদ্ধের পর, যখন মরক্কো ও আলজেরিয়ার মধ্যে সীমান্ত সংঘাত ঘটে।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, টানা সাত বছরের খরায় মরক্কোর পশুপালনের হার কমেছে ৩৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে একটি মাঝারি আকৃতির ভেড়ার দাম ছিল প্রায় ৬০০ মার্কিন ডলার, যা অনেক নিম্ন আয়ের পরিবারের নাগালের বাইরে। অপরদিকে, দেশের সর্বনিম্ন মজুরি বর্তমানে মাসিক ৩,১০০ দিরহাম (প্রায় ৩৩৫ ডলার)। এই পরিস্থিতিতে পশু কুরবানি অনেক পরিবারেই একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।

ঈদের এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তের পর কৃষকদের জন্য ৭০০ মিলিয়ন দিরহাম (প্রায় ৭৬.৫ মিলিয়ন ডলার) বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ক্ষুদ্র পশুপালকদের ঋণ মওকুফ এবং মা-গাভী/ভেড়া রক্ষাকারীদের জন্য আলাদা ভর্তুকি ঘোষণা করা হয়েছে।

রাজধানী রাবাতের এক বাসিন্দা ফাতিমা বলেন, 'রাজা বাস্তবতা বুঝে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা অনেকের মুখে হাসি এনে দিয়েছে। এটা ইসলামের সহানুভূতির প্রকৃত চর্চা।' গ্রামীণ এলাকা বেনস্লিমানের বাসিন্দা আবদেলআলি বলেন, 'এই বছর ঈদের বাজার যেন নিস্তব্ধ। কেউ না জানলে বোঝার উপায় নেই যে ঈদ আসন্ন।'

টিকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান মালয়েশিয়ার Sep 16, 2025
img
ঢাকায় বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস Sep 16, 2025
img
ফিরছে চ্যাম্পিয়নস লিগ, ফুটবল-ক্রিকেটে জমজমাট রাত Sep 16, 2025
img
ইইউ বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ Sep 16, 2025
img
হামাস যেখানেই থাকুক, হামলা করা হবে : নেতানিয়াহু Sep 16, 2025
img
দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে কিনশাসা, ঢাকার অবস্থান ২৩তম Sep 16, 2025
img
শরীর নয়, মন ভালো রাখতেও জরুরি সঠিক খাবার Sep 16, 2025
img
১৬ সেপ্টেম্বর: ইতিহাসে এই দিনে আলোচিত কী ঘটেছিল? Sep 16, 2025
img
শেরপুরে জাতীয় পরিচয়পত্র করতে এসে রোহিঙ্গা যুবক আটক Sep 16, 2025
img
সাতক্ষীরায় ১ দিনে পানিতে ডুবে কিশোরসহ প্রাণ হারাল ৪ Sep 16, 2025
img
চ্যাম্পিয়নস লিগ শুরুর আগে সুসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ Sep 16, 2025
img
৩ জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার Sep 16, 2025
img
৩ চাকার যানবাহনগুলো সঠিক গবেষণার মাধ্যমে সমাধানের তাগিদ Sep 16, 2025
img
খুলনায় আড়াই মণ হরিণের মাংসসহ আটক ১ Sep 16, 2025
img
ভালুকায় শ্রমিকলীগের ২ নেতা গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
বিপিসির অভিযানে মানিকগঞ্জে ৩ ফিলিং স্টেশনের ৮টি ডিসপেন্সিং ইউনিট জব্দ Sep 16, 2025
img
কাপাসিয়ায় উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব লিয়ন বহিষ্কার Sep 16, 2025
img
জামালপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আটক ৬ Sep 16, 2025
img
আরাকান আর্মি ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকায় চোরাচালান বেড়েছে : বিজিবি Sep 16, 2025
img
চাঁদপুরে সরকারি চাল মজুতের দায়ে বিএনপি নেতাকে জরিমানা Sep 16, 2025