একজন টিভি স্ক্রিনের সামনে ক্রিকেটের বিশ্লেষণ ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব সামলান। আরেকজন খোদ ঝড় তোলেন ক্রিকেটের ২২ গজে। জাসপ্রিত বুমরাহ ও সঞ্জনা গণেশন যেন ক্রিকেটীয় পরিবারের অনন্য উদাহরণ। বিশ্বক্রিকেটে ভারতীয় এই পেসারের দাপট কারও অজানা নয়। তবে তিনি সন্তান জন্মের পর থেকে নাকি আরও ভালো ক্রিকেটার, বাবা ও স্বামী হয়ে উঠেছেন। এমনটাই জানালেন তার ক্রীড়া সঞ্চালক স্ত্রী সঞ্জনা।
সম্প্রতি তিনি ‘মোমেন্ট অব সাইলেন্স’ নামে এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে স্বামী বুমরাহ ও নিজেদের দাম্পত্য বোঝাপড়া নিয়ে কথা বলেছেন। ক্রিকেটীয় সূত্রেই ২০২১ সালে এই দুজনের পরিচয়, ওই বছরই তার বাঁধা পড়েন সাত পাকে। দুই বছর পর বুমরাহ-সঞ্জনার ঘরে আসে পুত্র সন্তান অঙ্গদ। ওই সময় ভারতীয় পেসার ব্যস্ত ছিলেন ২০২৩ এশিয়া কাপ আসরে শ্রীলঙ্কায়। অবশ্য সন্তান জন্মের মুহূর্তেই ছুটে যান প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে। এই পিতৃত্বের স্বাদ নাকি বুমরাহকে অনেক ক্ষেত্রে বদলে দিয়েছে।
সেই মুহূর্তের কথা জানিয়ে সঞ্জনা বলেছেন, ‘সন্তান হওয়ার সময় জাসপ্রিত এশিয়া কাপ খেলতে ব্যস্ত ছিল। তবু ঠিক সময়ে আমার কাছে পৌঁছে যায়। খুব জোর গলায় সবার সামনে বলতে চাই না। তবে আমার ধারণা, অঙ্গদ হওয়ার পর আরও ভাল ক্রিকেটার হয়েছে বুমরাহ। যদি দিনের শেষে আপনি একটা শান্তিপূর্ণ বাড়িতে ফেরেন যেখানে শুধু বাবা এবং স্বামী হয়ে থাকতে পারবেন, সেটা আপনাকে খুবই সাহায্য করবে।’
সঞ্জনা নিজে ক্রীড়া সঞ্চালক। বিয়ের পর একাধিকবার তিনি বুমরাহ’রও সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তাতে দেখেছেন, ক্যামেরার সামনে বুমরাহ মজা করার সুযোগ হাতছাড়া করেন না। গত বছর ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দৃশ্য তো পুরো ক্রিকেটবিশ্ব দেখেছে। সেই স্মৃতি হাতড়ে সঞ্জনা বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আমি ওর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। সমানে মজা করে যাচ্ছিল। কখনও চোখ টিপছিল, কখনও হাসছিল। ইচ্ছা করে আমার মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে চাইছিল। বুঝতে পারছিল আমাকে খুব কষ্ট করে মনঃসংযোগ ধরে রাখতে হচ্ছে।’
দু’জনের দাম্পত্যও বুমরাহ’র সাফল্যের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন সঞ্জনা। তার কথায়, ‘গল্প করার জন্য বুমরাহ আমার সেরা বন্ধু। ওর সঙ্গে বিছানায় শুয়ে একসঙ্গে চকলেট খাই। ওটিটিতে সিনেমা দেখি। কিংবা সারাদিন ধরে কী কী করলাম সেসব গল্প করি। এগুলোই আমাদের জীবনে অনেকটা শান্তি এনে দেয়।’
অন্যান্য ক্রিকেটারের স্ত্রীদের নিয়েও নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বুমরাহ’র স্ত্রী। প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব ও জীবনাচার ভিন্ন হলেও তাদের মধ্যে দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক দেখার কথা বললেন সঞ্জনা, ‘সবার ব্যক্তিত্ব ব্যতিক্রম, যার যার মতো। কখনও কখনও আমি ক্রিকেটারদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর স্ট্যান্ডে গিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করি। তখন আমি পুরো বিষয়টি আন্দাজ করি। এটি অনেকটা ইন-ইয়াং (চীনা দর্শনমতে– দুজন বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তির মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক) এর মতো। স্ত্রী ঠিক তেমন, যেমনটা ওই ব্যক্তির জন্য প্রয়োজন।’
আরআর/এসএন