বলিউড থেকে দাক্ষিণাত্যের সিনেমা — কৃতি খরবান্দার দীর্ঘ ১৬ বছরের সিনেমা-জীবন ছড়িয়ে রয়েছে নানা ভাষা আর বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে এতসব চরিত্রের ভিড়ে যে একটি চরিত্র কোটি মানুষের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলেছে, সেটি নিঃসন্দেহে ‘শাদি মে জরুর আনা’ ছবির আরতি শুক্লা।
একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে, স্বপ্ন দেখে সিভিল সার্ভিসের, আর প্রেমের চেয়ে নিজের ভবিষ্যৎকে বেছে নেয় সে। আরতি শুক্লা কোনো বিদ্রোহের প্রতীক নয়, বরং আত্মমর্যাদার সঙ্গে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত। কৃতি খরবান্দার এই চরিত্রকে যে সংযম আর বাস্তবতার সাথে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন, তা চোখে জল এনে দিয়েছে দর্শকের, আবার সাহসও জুগিয়েছে।
আরতির গল্প আসলে ভারতের হাজারো ছোট শহরের গল্প। লখনৌ, কানপুর কিংবা ভোপালের অজস্র স্বপ্নবাজ মেয়ের ভেতর লুকিয়ে থাকে আরতির মতো গল্প। প্রেম আর আত্মসম্মানের লড়াইয়ে আরতি বেছে নেয় নিজেকে — কোনো অনুশোচনা ছাড়াই। আর এখানেই কৃতির অভিনয়ের মাহাত্ম্য। কোনো অতিনাটকীয় সংলাপ নয়, কোনো অতিরিক্ত আবেগ নয় — বরং সংযম আর নীরবতায় তিনি এক চরিত্রকে প্রতিবাদের মূর্ত রূপ দিয়েছেন।
শুরুতে এক লাজুক কনে থেকে কৃতি যে আত্মবিশ্বাসী অফিসারের গল্প গড়েছেন, তা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা এক মধুর রূপান্তর। এই চরিত্রে তার দুর্বলতাই হয়ে উঠেছে তার সবচেয়ে বড় শক্তি।
১৬ বছরের অভিনয় জীবনে কৃতির সবচেয়ে বড় সাফল্য শুধু জনপ্রিয়তা নয় — তার অভিনয় সমাজের এক বার্তা। আরতি শুক্লা শুধু একটি সিনেমার চরিত্র নয়, সে এক প্রজন্মের স্বপ্ন আর আত্মসম্মানের প্রতীক। আর সে দেখিয়েছে, স্বপ্ন আর আত্মসম্মান একসঙ্গে বাঁচতে পারে — আর তার জন্য কাউকে ক্ষমা চাইতে হয় না।
এসএম/টিকে