২০২৫ সালের জুন, ঠিক পাঁচ বছর পেরিয়ে গেল সুশান্ত সিং রাজপুতকে হারানোর। বলিউডের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র কেবল একজন অভিনেতাই ছিলেন না, ছিলেন স্বপ্নবাজ, ছিলেন জিজ্ঞাসু ও অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন এক মননশীল মানুষ। ইনস্টাগ্রামে কোয়ান্টাম মেকানিক্স ব্যাখ্যা করা হোক বা রুমির কবিতা উদ্ধৃত করা, সুশান্ত এমন একজন, যাকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি পুরোপুরি ধারণ করতে পারেনি কখনোই।
ছোটপর্দার ‘মানব’ চরিত্র থেকে বড়পর্দায় নিজের যাদু ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তার অভিনীত চরিত্রগুলো আজও ভক্তদের হৃদয়ে বেঁচে আছে যেন এক অনন্ত কথোপকথনের মতো।
‘এম.এস. ধোনি : দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ সিনেমায় মহেন্দ্র সিং ধোনির চরিত্রে তিনি ছিলেন অনন্য। ধোনির বিখ্যাত হেলিকপ্টার শট থেকে শুরু করে সেই নির্লিপ্ত দৃঢ়তা, সবই তুলে এনেছিলেন বিশ্বাসযোগ্য অভিনয়ের মাধ্যমে।
‘ছিছোরে’ সিনেমায় অনিরুদ্ধ ওরফে অ্যানি চরিত্রে এক বাবা, এক বন্ধু আর এক অদম্য যোদ্ধার রূপ ফুটিয়ে তুলেছিলেন। “তোমার ফলাফল ঠিক করে না তুমি লুজার কিনা... তোমার চেষ্টা করে”, এই সংলাপ যেন আজও প্রতিটি হতাশ হৃদয়ে সাহস জোগায়।
‘কাই পো চে!’ সিনেমায় ইশান ভাট চরিত্র দিয়ে জানান দিয়েছিলেন, তিনি ছোটপর্দার নয়, বড়পর্দার জন্যই তৈরি। তারুণ্য, আবেগ আর আদর্শবাদ মিশিয়ে প্রাণবন্ত করেছিলেন চরিত্রটিকে।
‘ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সি!’ সিনেমায় নোয়ার থ্রিলারের গা ছমছমে আবহে চোখের ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন নিঃশব্দ অথচ বলিষ্ঠ এক চরিত্র।
সবশেষে ‘দিল বেচারা’। ম্যানি চরিত্র যেন তার নিজের জীবনকথাই নতুন করে বলেছিল দর্শকদের। “জন্ম কবে নেব, মৃত্যু কবে হবে , আমরা ঠিক করতে পারি না... কিন্তু কীভাবে বাঁচব সেটা আমাদেরই ঠিক করতে হয়।”, এই সংলাপ আজ যেন সুশান্তের জীবনের সারমর্ম।
মৃত্যুর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও ফ্রেমের বাইরে জীবিত এক গল্প হয়ে আছেন তিনি। নাচ, কবিতা, গগনচুম্বী স্বপ্ন আর জগতের অজানা রহস্যের প্রতি তার ভালোবাসা আজও ভক্তদের অনুপ্রাণিত করে।
বলিউডে বহু তারকা আসবে, যাবে। কিন্তু সুশান্তের নিঃশব্দ হাসি আর অমলিন উপস্থিতি থাকবে সিনেমার প্রতিটি আলো-ছায়ায়। মহাকাশে, কবিতায়, গল্পে সুশান্ত সিং রাজপুত আজও বেঁচে আছেন অজস্র হৃদয়ে।
এসএম/টিকে