ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) গত কয়েক আসর ধরেই ব্যাট হাতে ধারাবাহিক পারফর্ম করে চলেছেন সাই সুদর্শন। চলতি বছরে অনুষ্ঠিত আসরে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ব্যাটার। গুজরাট টাইটান্সের হয়ে তামিনলাড়ুর এই ক্রিকেটার ১৫ ম্যাচে ৭৫৯ রান করেন। যা তাকে চলমান ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজের স্কোয়াডে জায়গা করে দেয়। তবে নিজের অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে বিব্রতকর রেকর্ড গড়লেন সুদর্শন।
লিডসের হেডিংলিতে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম দিনে রীতিমতো দাপট দেখিয়েছে ভারতীয় ব্যাটাররা। ৮৫ ওভার ব্যাট করে ৪.২২ গড়ে তুলেছে ৩ উইকেটে ৩৫৯ রান। জোড়া সেঞ্চুরি করেন এই ম্যাচ দিয়ে অধিনায়কত্বের যাত্রা শুরু করা শুভমান গিল এবং তরুণ ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল। এ ছাড়া ঋষভ পান্ত ৬৫ রানে অপরাজিত এবং লোকেশ রাহুল ৪২ রান করেন। রান পাননি কেবল সাই সুদর্শন। অভিষেক টেস্টে আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই।
যদিও ম্যাচে দারুণ মোমেন্টাম পাওয়া ভারতের হয়ে সুদর্শন ক্রিজে নেমেছিলেন তিন নম্বরে। জয়সওয়াল-রাহুলের উদ্বোধনী জুটি ৯১ রানে ভাঙার পর এই বাঁ-হাতি ব্যাটার ব্যাট করতে আসেন। আইপিএলে চোখজুড়ানো শট খেলা সুদর্শন আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটটা করলেন বাজে শটে। ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকসের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি। ফলে ৪ বলে ০ রান করে সুদর্শনকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হয়। এর মধ্য দিয়ে তিনি প্রায় ২৬ বছর আগের একটি স্মৃতি ফিরিয়েছেন।
লাল বলের ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে ডাক নিয়ে আউট হওয়া অবশ্য প্রথম ব্যাটার নন সুদর্শন। তার আগে টেস্ট অভিষেকে শূন্য রানে আউট হয়েছেন আর পাঁচ ভারতীয় টপ অর্ডার ব্যাটার (এক থেকে তিন নম্বর)। তবে তিন নম্বরে নেমে শূন্য রানে ফেরা দেশটির প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। এর আগে দেভাং গান্ধি সবশেষ ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে মোহালিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ বলে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন।
এই তালিকায় থাকা বাকি ভারতীয় ব্যাটাররা হচ্ছেন— কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত (১৯৮১), কেএস ইন্দ্রজিৎসিংহজি (১৯৬৪), দত্তজিরাও গায়কোয়াড় (১৯৫২) ও মধুসুদন রেগে (১৯৪৯)। এর মধ্যে শ্রীকান্ত ছাড়া বাকিরা দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে ফিরেছিলেন। তার সঙ্গে যুক্ত হলেন সুদর্শন। অবশ্য যে প্রতিভা দেখিয়ে টেস্টে অভিষিক্ত হলেন তিনি, তাতে শুরুটা মন্দ হলেও নিশ্চয়ই আশা হারাবেন না ভারতীয় ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা। যদিও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বেশি অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সুদর্শনের টেস্ট স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে।
সমালোচনা হওয়াটাও অবশ্য স্বাভাবিক। কারণ এর আগে টেস্ট খেলা ধ্রুব জুরেল ও প্রথম শ্রেণিতে ১০১ ম্যাচে ৪৮.৮৭ গড়ে রান করে এখনও টেস্ট অভিষেক না হওয়া অভিমন্যু ইশ্বরন যে স্কোয়াডে আছেন। তবে জায়গা হয়নি প্রথম টেস্টের একাদশে। শুরুটা বিব্রতকর হলেও নিজের আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাটকে পাশে পাচ্ছেন সুদর্শন। এই ব্যাটারের শক্তিশালী কামব্যাক নিয়ে আশাবাদী গুজরাট, ‘সেরা গল্পের প্রথম অধ্যায়টা কঠিন হয়। তবে আমরা আশাবাদী সাইসু পরের ইনিংসে শক্তিশালী হয়ে ঘুরে দাঁড়াবে।’
এফপি/টিএ