নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আব্দুল কুদ্দুস মিয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। শনিবার (২১ জুন) রাতে উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল কুদ্দুস মিয়া (৭০) উপজেলার হাফেজীবাগ এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
এ দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার হাজারীবাগ রেললাইন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাওসার আশার কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে আরেক সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের লোকজনের বিরোধ চলছে। শুক্রবার (২০ জুন) এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আটজন আহত হন। এ ঘটনায় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এরই জেরে শনিবার (২১ জুন) রাত সাড়ে ৯টায় হান্নান সরকারের গ্রুপের বাবু-মেহেদীর নেতৃত্বে আশা গ্রুপের জাফর-রনির ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হান্নান গ্রুপের লোকজন আশা গ্রুপের আব্দুল কুদ্দুসকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার জেরে আশা গ্রুপের লোকজন সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারের বাসায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার ‘এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে আমাকে জড়িয়ে আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। বরং আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে।’
সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাওসার আশা বলেন, ‘বাবু, মেহেদী, রনি ও জাফর সবাই এক সময় একসঙ্গে চলাফেরা করত। কিন্তু সম্প্রতি অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।’
সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আরআর