১৫ বছর পরে দেব-শুভশ্রীর পর্দায় প্রত্যাবর্তন। ছবি তৈরির নয় বছর পরে মুক্তি পাচ্ছে ‘ধূমকেতু’। চাপা উত্তেজনায় ফুটছেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তর সইছে না নায়ক-নায়িকার অনুরাগীদেরও। নয় বছর ধরে প্রায় প্রতি দিন তাঁরা হয় দেব, নয়তো ছবির প্রযোজক রানা সরকারের সমাজমাধ্যমে মাথা খুঁড়েছেন, ‘আমরা ছবিটি দেখতে পাব না?’
সোমবার প্রকাশ্যে ছবির টিজ়ার। ‘ধূমকেতু’ মুক্তি পাবে ১৪ অগস্ট। তার আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে ছবি প্রসঙ্গে সবিস্তার আলোচনা করতে গিয়ে রানা গোপন ইচ্ছার কথা শোনালেন। জানালেন, তার প্রথম ইচ্ছা দেব-শুভশ্রীকে নিয়ে আবারও ছবি বানানোর। “একটা নয়, একাধিক। তারই একটি হয়তো পরিচালনা করবেন সঞ্জয় লীলা ভন্সালী!”
এ বছর রানার দাগ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজনা সংস্থার ১৫ বছর। এ বছর প্রযোজকের ঝুলিতে বড় মাপের দুটো ছবি, ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’, ‘মহুয়ায় জমেছে মৌ’ (মহুয়া রায়চৌধুরীর জীবনীছবি)। রানার প্রযোজনায় সৌরভ পালোধি পরিচালিত ‘অঙ্ক কী কঠিন’ দর্শক প্রশংসিত। অগস্টে মুক্তি পাচ্ছে ‘ধূমকেতু’।
কতগুলো বিনিদ্র রাত কাটানোর পর ঝলমলে সকাল দেখছেন? ‘ধূমকেতু’ মুক্তি পাবে আদৌ ভেবেছিলেন? “আমি কখনও আশা ছাড়ি না। দেবও এই ছবিমুক্তির জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। সকলের শুভেচ্ছা ছিল। তা ছাড়া, ছবির মহরৎ হয়েছিল পুরীতে।
প্রধান পুরোহিত নিজে ক্ল্যাপস্টিক দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন। ঈশ্বরের আশীর্বাদ কখনও বৃথা হয় না”, বললেন প্রযোজক। ইতিমধ্যেই জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ নিতে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন পুরীতে। তার পরেই দর্শকদের প্রতি তার অনুরোধ, “এত দিন দর্শকেরা ক্রমাগত অনুরোধ জানিয়েছেন। তাদের সম্মিলিত ইচ্ছেয় প্রেক্ষাগৃহে আসছে ‘ধূমকেতু’।
এ বার তাদের হল ভরানোর পালা।” ২০১৬ সালের ছবি ২০২৫-এ মুক্তি পেয়েও বক্স অফিসে ম্যাজিক দেখাতে পারবে? “কেন পারবে না? উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকার সৌন্দর্য ক্যামেরায় ধরা আছে। নিটোল গল্প আছে। পরিচালক কৌশিকদার গল্পের জাদুকাঠি আছে। সবচেয়ে বড় কথা দেব-শুভশ্রী জুটি আছে। ছবি হিট করাতে আর কী চাই?” আরও আছে। দেবের ৭০ বছরের বিশেষ ‘লুক’ আছে। সেই ‘লুক’ ঘিরে নাকি রূপসজ্জাশিল্পী সোমনাথ কুণ্ডুর প্রচ্ছন্ন অভিমান আছে।
“এ রকম কিচ্ছু আমি শুনিনি। দেবের এই বিশেষ ‘লুক’-এর স্রষ্টা বিক্রম গায়কোয়াড়। বিক্রম আমার ছবি ‘জাতিস্মর’-এর রূপসজ্জার জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। ওর সঙ্গে আলাদা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তাই ওকে ছাড়া আর কারও কথা ভাবিইনি।” প্রসঙ্গত, ছোট পর্দার জন্য তৈরি কৌশিকের দ্বিতীয় ছবি ‘উল্কা’র সামান্য ছায়া ‘ধূমকেতু’তে রয়েছে।
হেসে ফেললেন রানা। জানিয়েছেন, অবশ্যই থাকবে। ওই দৃশ্যের টানেই হয়তো একাধিক বার দর্শক ছবিটি দেখবেন। থাকবে বিয়ের দৃশ্যও।
‘ধূমকেতু’ নিয়ে বলতে বলতে প্রযোজক পৌঁছে গিয়েছেন নয় বছর আগে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছায়া এই ছবিতে রয়েছে। নায়ককে বরফের মধ্যে রাইফেল হাতে অ্যাকশন করতে দেখা যাবে। শুটিং করতে দলবল নিয়ে কাশ্মীর পৌঁছে গিয়েছিলেন? “না না। শিমলা, কুলু, মানালি-সহ উত্তর ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে শুটিং করেছি।”
ছবির কোনও দৃশ্য যাতে প্রকাশ্যে না আসে তার জন্য কৌশিক, দেব, শুভশ্রী, রানা-সহ দলের প্রত্যেকের মুঠোফোন বন্ধ করে বাইরে জমা দিয়ে সেটে ঢুকতে হত। প্রত্যেকে যাতে কাজের প্রতি একনিষ্ঠ থাকেন সেটাও আর একটি কারণ।
দেব-শুভশ্রী কতটা উত্তেজিত? অবশ্যই খুশি। ইতিমধ্যেই তারা ভিডিয়ো বার্তায় ছবির প্রচার শুরু করে দিয়েছেন, বক্তব্য রানার। এক সঙ্গে প্রচারে বেরোবেন কবে? পুরো দল বৈঠকে বসবে। তার পর ঠিক হবে সব। ‘ধূমকেতু’ আরও একটি ঘটনার সাক্ষী। এই ছবির আগে দেব-শুভশ্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছে।
২০১৩-য় ‘খোকা ৪২০’-এর পর আর কোনও ছবি করেনি। তিন বছর পর্দাভাগ না করার পর ওরা এই ছবি দিয়ে আবার ফিরেছিলেন।” অভিনয়ের সময় সেই দূরত্ব কাউকে বুঝতে দেননি। সারাক্ষণ সেটের প্রত্যেকের সঙ্গে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।
পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রকে আমন্ত্রণ জানাবেন তো? ওরা দেব-শুভশ্রীর সঙ্গে প্রচারে থাকবেন? “রাজ ইতিমধ্যেই শুভশ্রীকে প্রচণ্ড ভাবে মানসিক সমর্থন জানাচ্ছেন। রুক্মিণীও নিশ্চয়ই একই পথে হাঁটবেন”, জবাব এল রানার থেকে।
আরএম/এসএন