টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করলেন এনামুল হক বিজয়। টপ অর্ডার ব্যাটার হয়ে অন্তত ১৪ ইনিংসে সর্বনিম্ন ব্যাটিং গড় এখন এই টাইগার ওপেনারের দখলে। বাংলাদেশি ওপেনারদের মধ্যেও বিজয়ের পরিসংখ্যান সবচেয়ে বাজে। যদিও ক্রিকেটারদের এমন ব্যর্থতায় দায় এড়াতে পারবে না নির্বাচক প্যানেল।
বিজয় শুধু লঙ্কানদের বাঁচালো না, মুক্তি দিলেন নিজেকেও। পরপর দুই টেস্টে ১০ বলের ডাক। সাদা পোশাকের ক্যারিয়ারেও সম্ভবত ইতি টেনে ফেললেন ঘরোয়া ক্রিকেটে বরাবরই আলো ছড়ানো এই ব্যাটার।
ব্যাটিং অর্ডারে ১ থেকে ৪, অর্থাৎ পুরোদস্তুর ব্যাটার হিসেবে অন্তত ১৪ ইনিংস খেলা ক্রিকেটারদের মাঝে বিজয়ের চেয়ে কম রান কিংবা অ্যাভারেজ নেই অন্য কারো। কলম্বোতে ডাক মেরে, এই ওপেনার ভেঙেছেন প্রায় ১০০ বছরের রেকর্ড।
বিজয় নাম উঠিয়েছেন আরেকটা অনাকাঙ্খিত রেকর্ডের খাতায়। টাইগার টপ অর্ডারের মধ্যে অন্তত ৬ টেস্ট খেলে দশের নিচে গড় কেবল তার দখলে। পেছনে ফেলেছেন মেহরাব হোসেন অপিকে।
তবে এই ব্যর্থতায় শুধু এই বিজয়কে নয়, দায় নিতে হবে নির্বাচকদেরও। সাদা বলের টুর্নামেন্ট ডিপিএলে পারফর্ম করে, লাল বলের ফরম্যাটে যে সুযোগ পাওয়া যায়, সে দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছে লিপু-রাজ্জাকের প্যানেল।
অবশ্য সিলেকশন নিয়ে এই নয়-ছয় নতুন কিছু না। এই যেমন লঙ্গার ভার্সনের টুর্নামেন্ট এনসিএলে পারফর্ম করেও অমিত হাসানকে বিবেচনায় নেয়নি নির্বাচকরা। একইভাবে বিজয়কে টেস্টে নামিয়ে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বাড়তি চাপ।
ভুক্তভোগী তো বাকিরাও। এই যেমন সদ্য ঘোষিত ওয়ানডে স্কোয়াডে নেই নুরুল হাসান সোহান । অথচ এই ক্রিকেটার পারফর্ম করেছেন ডিপিএল আর ‘এ’ দলের হয়ে। অন্যদিকে, সীমিতি ওভারের দল থেকে বাদ পড়া লিটনকে ফেরানো হয়েছে কোন ধরনের পারফরম্যান্স ছাড়াই।
সোহানের মতো অজানা কারণে উপেক্ষিত নাসুমও। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে থাকা স্পিনারকে হুট করে কেন রাখা হলো না শ্রীলঙ্কা সিরিজের দলে, সে প্রশ্নের উত্তর নেই। অথচ এই নাসুম মোহামেডানের হয়ে ডিপিএল আর নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের সিরিজে ছিলেন দারুণ ছন্দে।
সঠিক সময়ে সঠিক ক্রিকেটারকে সঠিক ফরম্যাটে সুযোগ দেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যম-সোশ্যাল মিডিয়ার পপুলিস্ট চিন্তাভাবনা যদি নির্বাচকদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে, তাহলে সেসব সিদ্ধান্ত যে ভোগান্তির কারণ হবে, এমনটাই তো স্বাভাবিক।
আরএম