“ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে টেকসই শান্তি” প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানের সাথে আলোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মধ্যে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় পাকিস্তান সবসময় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে আগ্রহী বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ। শুক্রবার (২৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বৃহস্পতিবার এক ফোনালাপে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ থামাতে একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। গত ১৩ জুন ইসরায়েলের ইরানে হামলার মাধ্যমে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
এর আগে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে ইরান নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাম্প সেসময় বলেছিলেন, “পাকিস্তান ইরান সম্পর্কে অন্য যে কোনও দেশের চেয়ে ভালো জানে।”
মূলত যুক্তরাষ্ট্রে ইরানের কোনও দূতাবাস না থাকায় ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের দূতাবাসের একটি অংশ ইরানের স্বার্থ সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়: “দুই নেতা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।”
এতে আরও বলা হয়: “পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও জোর দিয়ে বলেন, ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বা অর্জন করতে পারবে না।”
অন্যদিকে পাকিস্তান সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনকল গ্রহণ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়: “ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাহসী ও ফলপ্রসূ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।”
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান সবসময় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে আগ্রহী। রুবিওও পাকিস্তানের এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চায়।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এমন সময় শুরু হয় যখন ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে পুরো অঞ্চল আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে আছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই গত সপ্তাহান্তে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায় এবং এর জবাবে সোমবার ইরান কাতারে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এরপরই ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
পাকিস্তান অবশ্য ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিরোধী হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। তবে একই সঙ্গে ইসলামাবাদ চলতি মাসে এক বিবৃতিতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চার দিনের যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের ভূমিকার জন্য তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে।
কেএন/টিকে