আবার জাঁকিয়ে বসেছে পঞ্চায়েত। চলছে নতুন সিজন নিয়ে উন্মাদনা। জিতেন্দ্র কুমার, নীনা গুপ্তা, রঘুবীর যাদবের মতো অভিনেতা থেকে নিজের জীবন, অকপটভাবে ধরা দিলেন অভিনেত্রী পূজা সিং ওরফে সাংভিকা ওরফে রিংকি।
সচিবজি ওরফে জিতু কুমারের সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গ রসায়নে মুগ্ধ সবাই। সাংভিকা সাফ বলছেন, ‘‘আমাদের মধ্যে একটা অব্যক্ত রসায়ন আছে। সেটা দেওয়া এবং নেওয়ার- আমরা খুব একটা কথা বলি না, ওই একেবারে টুকটাক একটা-দুটো! কিন্তু পারফর্ম করার সময়ে আমরা একে অপরকে খুব ভালভাবে বুঝতে পারি।’’
‘‘আমরা মহড়াও দিই না, কেবল শট নেওয়ার আগে একত্র হই। জিতু খুবই সাপোর্টিভ এক কো-স্টার, ও আমায় কমফর্টেবল ফিল করার জায়গাটা দিয়েছে, নবাগতা কখনই ফিল করায়নি। আমাদের মধ্যেকার এই প্রশান্তিটা পর্দাতেও ফুটে ওঠে’’, তিনি আরও বলেন সচিবজি সম্পর্কে
ওয়েব সিরিজে তাঁর চরিত্রে অভিনয় করছেন নীনা গুপ্তা। সেই প্রসঙ্গ উঠতেই একগাল হেসেছেন সাংভিকা। বলেছেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমনটা দেখা যায়, উনি বাস্তব জীবনেও ঠিক ততটাই বর্ণময় এক মানুষ। অভিনয় করা, সাজপোশাক করা এই সমস্তই উনি খুব উপভোগ করেন। খুবই হাসিখুশি এক মানুষ, আবার একই সঙ্গে খুব কড়াও, তাই উনি কাছাকাছি থাকলে সবাই একটু সমঝে চলে। কোনও সমস্যা হলেই উনি সঙ্গে সঙ্গে মুখ খোলেন, লোকের সম্মানও সে জন্য পান! আমার সঙ্গে ওঁর সম্পর্ক অভিনয় করতে করতে গভীরতর হয়েছে।
আমি আগেও বলেছি যে উনি আমার ব্যাপারে একটু প্রোটেকটিভ। যখনই কেউ আমায় কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে, উনি সঙ্গে সঙ্গে আমার হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছেন, এটাই ওঁর ভালবাসার ধরন’’। প্রধানজি সম্পর্কেও তাঁর বক্তব্যে ধরা দিয়েছে শ্রদ্ধা। ‘‘আমি আমার সারা জীবনে যে সব হাসিখুশি মানুষ দেখেছি, উনি তাঁদের মধ্যে একজন। তাঁর সঙ্গে দেখা হলেই উনি এমন ভাবে মানুষকে গ্রহণ করেন যেন সে তাঁর বহু দিনের পরিচিত, এই উষ্ণতা তাঁর স্বভাবে আছে"
রঘুবীর যাদব সম্পর্কে বলছেন সাংভিকা। ’’ উনি সারাক্ষণ সেটের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করেন, লোকজনের সঙ্গে রসিকতা করেন, গান গেয়ে থাকেন আর বোর হয়ে গেলে নিজের মনে কবিতা আওড়ান! এই এনার্জিটাই সংক্রামক, আমার ভাগ্য খুব ভাল যে এমন এক মানুষের সংস্পর্শে আসতে পেরেছি’’, বলছেন তিনি।
যখন জানতে চাওয়া হয় পর্দার রিংকির সঙ্গে সাংভিকার কোনও মিল আছে কি না, সামান্য হলেও সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। ‘‘আমি রিংকির সঙ্গে খুব সামান্য হলেও নিজেকে কানেক্ট করতে পারি। যেমন আমিও রিংকির মতো অন্তর্মুখী অথচ জেদি স্বভাবের একে মেয়ে। তবে, আমাদের মধ্যে অনেক পার্থক্যও আছে। রিংকি এখনও নিজের জায়গা তৈরি করে যাওয়ার চেষ্টা করে চলেছে, এখনও অনেক কিছুর জন্যই সে তার মা-বাবার ওপরে নির্ভর করে থাকে। আমি স্বনির্ভর, আমি আমার রাস্তা নিজে তৈরি করে নিই, কোনও অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতে ছাড়ি না!
লোকে বলে আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করছি, আসলে কিন্তু আমি আমার কথাটা কেবল খুব ভদ্র ভাবে বলে দিই। আমি সব সময়েই অন্য পক্ষকে শোধরানোর সুযোগ দিই, কিন্তু যখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন আর চুপ করে থাকি না, প্রতিবাদ করি’’, নিজের স্বভাব নিয়ে অকপট সাংভিকা। বলে রাখা উচিত হবে যে সাংভিকা কোনও চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত পরিবার থেকে আসেননি। তাঁর অভিনয়ের ধরনও খুব আলাদা, যাঁরা ওয়েব সিরিজটি দেখছেন, সে কথা খুব ভালমতোই জানেন। পঞ্চায়েত তাঁকে এক ধাক্কায় জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত করে দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি সত্যি সত্যিই কৃতজ্ঞ! আমি সব সময়েই জানতাম যে আমি বড় কিছু করব, ভালো রোজগার করব, একটা সুন্দর জীবন গড়ে তুলব নিজের- তা বলে এত ভালবাসা! এটা কখনই ভেবে উঠতে পারিনি! একটা বাচ্চা থেকে ৮০ বছরের দাদী পর্যন্ত সবাই রিংকির সঙ্গে কানেক্ট করতে পারে- এ এক বড়সড় আশীর্বাদ"!
কেরিয়ার নিয়ে যখন কথা ওঠে, সাংভিকা তাঁর পছন্দের পরিচালকদের নাম বলে যান গড়গড় করে। ‘‘মণি রত্নম স্যার আর সঞ্জয় লীলা বনশালি স্যারের সঙ্গে খুব কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। বনশালি স্যার এত সাড়ম্বরে, এত কাব্যিক ভাবে নারীচরিত্র তুলে ধরেন, ঠিক যেন মনে হয় ছবি আঁকছেন! আমিও তার অংশ হতে চাই। জোয়া আখতার, অনুরাগ কাশ্যপ, সুজিত সরকার- এমন অনেক অনেক পরিচালক আছেন যাঁদের আমি খুবই শ্রদ্ধা করি’’।
সহ অভিনেতাদের প্রসঙ্গ ফের উঠল, সাংভিকা বললেন যে তিনি আলাদা ভাবে কারও নাম করে উঠতে পারবেন না! "এরকম নির্দিষ্ট করে তালিকা তৈরি করা যাবে না! আমি অনেককেই শ্রদ্ধা করি। যদি এমন অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাই যিনি একজন ভাল মানুষও, সেটাই তো যথেষ্ট আমার জন্য’’, দাবি তাঁর!