২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে নিয়ে আবারও ষড়যন্ত্র হচ্ছে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশের কারিগর হচ্ছেন ২৪-এর শহীদরা। শহীদদের স্বপ্ন, তাদের আত্মত্যাগ ও আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে জুলাই পদযাত্রার তৃতীয় দিনে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের হাতিখানা কবরস্থানে জুলাই ২৪-এর শহীদ সৈয়দপুরের সাজ্জাদ হোসেনের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এখনো তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অনলাইনে তাদের আস্ফালন আপনারা দেখতে পারবেন। পুরনো রাজনীতিকে অনেকেই টিকিয়ে রাখতে চায়।
পুরনো বন্দোবস্তের রাজনীতির নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু বন্দোবস্ত পরিবর্তন হয়নি। তারা অনেকেই পুরনো বন্দোবস্তকে টিকিয়ে রেখে তাদের জায়গায় আসতে চায়। তারা গণ-অভ্যুত্থান ব্যাহত করতে এবং সংস্কারকে পিছিয়ে দিতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সারা দেশে যে জুলাই পদযাত্রা শুরু করেছি, এতে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখছি। আপনার শুনেছেন গতকাল রাতে আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এটিই প্রথমবার নয়, এ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দুইবার এ ঘটনা ঘটাল।’
এনসিপির এই আহ্বায়ক বলেন, মূলত আমাদের এ কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটানো, ব্যাহত ও ভয় দেখানো জন্য এ ধরনের কার্যক্রম করা হচ্ছে। আমরা এর আগের ঘটনাতে একটি মামলা করেছি।
কিন্তু কোন প্রতিকার ও গ্রেপ্তার পাইনি। প্রশাসন যদি এভাবে নির্বিকার থাকে, তাহলে একটি গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী একটি নতুন দলের যদি এই অবস্থায় হয়। আমাদের যদি নিরাপত্তা সরকার দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে হাজারো শহীদ, হাজারো আহত ও পরিবার তথা আপামর মানুষের নিরাপত্তা সরকার কীভাবে নিশ্চিত করবে। এ পরিস্থিতিতে কীভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এ প্রশ্ন আমাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে। প্রশাসনকে এ ব্যাপারে আরো শক্ত ও কঠোর হওয়া উচিত।
সৈয়দপুরে উর্দুভাষীদের উদ্দেশ্যে নাহিদ বলেন, বিহারী (উর্দুভাষী) জনগোষ্ঠীর সমস্যা দীর্ঘদিনের। আর এনসিপি আসলে নাগরিকের মর্যাদা, অধিকার ও দায়িত্বের জন্য কাজ করে। ফলে ভাষা আমাদের উর্দু,বাংলা কিংবা চাকমা হোক। সেটি আসল পরিচয় নয়। আমাদের সবার পরিচয় আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। তাই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যেসব সুযোগ সুবিধা রয়েছে তার সুষম বণ্টন করতে হবে।
এ সময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ্, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আলমগীর হোসেনসহ এনসিপির কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর নাহিদ ইসলাম সৈয়দপুর শহরের বিমানবন্দর সড়কের পাশে থাকা আটকে পড়া পাকিস্তানি উর্দুভাষী (বিহারী) হাতিখানা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ক্যাম্পবাসী উর্দুভাষীদের জীবনযাত্রা বাস্তব চিত্র অবলোকন করেন এবং তাদের সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর নেন।
পরে তিনি সৈয়দপুর শহরের বিমানবন্দর সড়ক থেকে নীলফামারীর উদ্দেশ্যে পদযাত্রায় অংশ নেন।
টিএ/