নির্বাচনে বিএনপির আসন পাওয়া নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর দেওয়া বক্তব্য আগামীর গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেছেন, সজীব ওয়াজেদ জয় ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বলেছিলেন- ‘এবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে’। তখন তার কথা নিয়ে সবাই হাসাহাসি করেছিল। সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতোই বক্তব্য দিয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তার কথা নিয়েও অনেক ট্রল হয়েছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হলো- পাটওয়ারীর যে বক্তব্য, সজীব ওয়াজেদ জয়ের সেই ‘আমার কাছে তথ্য আছে’ সেই বক্তব্যের মতোই এবং আগামী গণতন্ত্রের জন্য ভীষণ অশনিসংকেত।
নির্বাচনে আসন পাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সাবেক সিইসি নুরুল হুদা ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, সেই জবানবন্দি শোনেন, তাহলে দেখতে পাবেন, নির্বাচনের অনেক আগেই ডিজিএফআই, এনএসআই, পুলিশ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা পুরো নির্বাচনের মাঠের দখল নিয়ে নিয়েছিল। তারা রাতে ব্যালট বাক্স পিটিয়ে, ব্যালট বাক্স ভরার যে পরিকল্পনা তারা করেছিল, সেটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৯ না ৩০ ডিসেম্বর রাত ১২টার মধ্যে সারা দেশে একই সঙ্গে, সেম টাইমে করে ফেলেছেন। এ কথাগুলো জানতাম কিন্তু কথাগুলো এখন কাগজে কলমে নুরুল হুদা বলছেন।
গোলাম মাওলা রনি আরো বলেন, জয় তো সহজ সরল মানুষ। তিনি এ সমস্ত প্যাঁচগোচ বুঝেননি।হয়তো উচ্চ পর্যায়ের এ রকম কোনো চক্রান্তের খবর বা এরকম কোনো বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন। ওই চক্রান্তটি তিনি জেনে গিয়েছিলেন। এ কথা শোনার পর তিনি প্রেসের সামনে এসে এমনভাবে কথাটা বলে ফেলেছিলেন, যখন তার মুখ দিয়ে কথা শোনার পর মনে হয়েছে যে, এটি একটি বালখিল্য। ঠিক একইভাবে এনসিপির তরুণ নেতা যেভাবে বললেন, বিএনপি ৫০ থেকে ১০০টি সিটের বেশি পাবে না। বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচন হলে বিএনপির হাত থেকে একটা সিট নেবে এ রকম অবস্থা নেই।
তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সনে যেভাবে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব ছিল মাঠে, ঠিক একই কর্তৃত্ব এখন বিএনপির। এমনকি জামাতের কোনো নেতা বিএনপির স্থানীয় নেতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওখানকার থানায় পুলিশকে ম্যানেজ করে নিজেদের প্রার্থীকে জয় লাভ করিয়ে আনবে, এ রকম তাগত নেই। এখন পর্যন্ত বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, জেলাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অর্থাৎ বিএনপি জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভোটারদের মাঠে এনে বিরাট একটা ভোট বিপ্লব ঘটানো, একেবারে এক কোটি ভাগের মধ্যে একভাগেও সম্ভব নয়। ২০২৪ সনে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের যে অনিহা ছিল, আতঙ্ক ছিল, এখন এই সময়টিতে এসে, সেই ভয় আতঙ্ক এবং অনীহা বহুগুণে বেড়েছে।
আরআর/টিএ