শ্বাসকষ্টে যা করবেন, যা করবেন না

শ্বাসকষ্টজনিত রোগকেই সাধারণত হাঁপানি বা অ্যাজমা বলা হয়ে থাকে। এ রোগের সঙ্গে কম বেশি সবাই পরিচিত। ধুলোবালিতে এ রোগের তীব্রতা একটু বেড়ে যায়।

এ রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশিরভাগ সময় তারা মধ্যরাতে বা ভোরের দিকে ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসে থাকে। কারণ সে সময় তাদের শ্বাস টানতে এবং ছাড়তে ভীষণ কষ্ট হয়।

বুকের মধ্যে আঁটসাঁটভাবে এবং বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ হয়। যারা রোগীর পাশে থাকেন, তাদের কানেও আওয়াজ যায়। রোগীর সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়। শিশুদের জন্য এটি অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি।

হাঁপানি রোগীদের শ্বাসটান আকস্মিকভাবেই ওঠে। বিশেষ করে হঠাৎ ঠাণ্ডা আবহাওয়ায়, মৌসুম পরিবর্তনের সময়, ধুলাবালি লাগলে, ঘর ঝাড়মোছ করলে বা ফুলের পরাগরেণুর সংস্পর্শে রোগীর হাঁপানির টান ওঠে।

এ সংক্রান্ত রোগীদের চলাফেরা, ওঠাবসা, খাবার-দাবার এক কথায় জীবনযাত্রার সব বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। তাদের জন্য কিছু করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয় রয়েছে-

  • ধুলাবালি থেকে বাঁচতে রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন।
  • বাসা বাড়িতে কার্পেট ব্যবহার না করাই অতি উত্তম।
  • ঘরে ধূপ ব্যবহার করবেন না।
  • যেকোনো প্রকার স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।
  • বাসায় বিড়াল, কুকুর বা অন্য কোনো প্রাণী পোষা থেকে বিরত থাকুন।
  • ঘর ঝাড়ু দেয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন বা গামছা দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন।
  • মশার কয়েলও শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করে থাকে, এর থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করুন।
  • যে কোনো উপায়ে ধূমপান পরিহার করা অপরিহার্য।
  • ঠাণ্ডা জল এবং শীতল খাবার গ্রহণ করা পরিহার করুন।

যাদের হাঁপানি আছে তাদের জেনে রাখা ভালো হঠাৎ শ্বাসটান উঠলে, বিশেষ করে ছোটদের হলে, সঙ্গে সঙ্গে কী করা উচিত।

  • রোগীকে সোজা হয়ে বসতে বলুন ও আশ্বস্ত করুন যে আতঙ্কের কিছু নেই।
  • উপশমকারী সালবিউটামল বা সালবিউটামল ও ইপরাট্রোপিয়ামযুক্ত ইনহেলার স্পেসারের সাহায্যে ধীরে ধীরে পাঁচটি চাপ নিন। স্পেসার না থাকলে কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করতে পারেন।
  • স্পেসারের মধ্যে প্রতিবার এক চাপ দিয়ে তা থেকে পাঁচবার শ্বাস নিতে হবে। এভাবে পাঁচবার চাপ দিন। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে খেয়াল করুন, শ্বাস বড় করে ওষুধ ঠিকমতো টেনে নেয়া হচ্ছে কি না, খেয়ে ফেললে কাজ হবে না।
  • ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। বিশ্রাম নিন। তারপরও শ্বাসকষ্ট না কমলে আবার পাঁচ চাপ নিন। এভাবে মোট পাঁচবার (মোট ২৫ চাপ) নেয়া যেতে পারে।
  • এরপরও শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির টান না কমলে রোগীকে কাছাকাছি হাসপাতালে নিতে হবে বা নেবুলাইজার যন্ত্রের সাহায্য লাগবে। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত পাঁচ চাপ করে ইনহেলার নিতে থাকবেন।
  • শুরুতেই জিব, নখ বা আঙুল নীল হয়ে এলে, শ্বাসকষ্টের জন্য কথা পর্যন্ত না বলতে পারলে বা চেতনা হারিয়ে যেতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নেয়াই ভালো। এ ক্ষেত্রে নেবুলাইজার ছাড়াও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।

 

টাইমস/এসআই

 

Share this news on:

সর্বশেষ