যৌতুকবিরোধী আইনে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা নারীর ন্যায়বিচারে বাঁধা: মহিলা পরিষদ

যৌতুক দাবি এবং যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলা দায়েরের আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনটি এই বিধানকে নারীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে উল্লেখ করে তা পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর মাধ্যমে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০-এ নতুন ২১(খ) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, যৌতুক দাবি বা যৌতুকজনিত সাধারণ জখমের অভিযোগে মামলা দায়েরের আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রথমে লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে হবে।
মধ্যস্থতা ব্যর্থ হলে তবেই আদালতে মামলা করা যাবে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে, এই বিধান নারীর বিচারপ্রাপ্তির পথকে দীর্ঘায়িত ও জটিল করে তুলবে। বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার ফলে ভুক্তভোগী নারী আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করাও কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এতে হয়রানির আশঙ্কা বাড়বে, অপরাধীরা উপকৃত হবে এবং সমাজে যৌতুকের মতো অপরাধের প্রতি সহনশীলতা তৈরি হবে।

বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, যৌতুক প্রতিরোধে দেশে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন হয়েছে এবং এটি দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে আইন স্বীকৃতি দিয়েছে। এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা ঠিক হবে না, যা অপরাধকে লঘু করে তোলে বা এর বিরুদ্ধে সামাজিক অবস্থান দুর্বল করে।

এ অবস্থায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সরকারের কাছে সংশোধিত ২১(খ) ধারা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি যৌতুকের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরি ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছে।

এফপি/ টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া ভারত কখনো বন্ধু হতে পারে না: নাহিদ ইসলাম Nov 02, 2025
img
আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন দিয়েছে ভারত Nov 02, 2025
img
পদ্মার ১ পাঙাশ বিক্রি হলো ৭০ হাজারে Nov 02, 2025
img
লাইসেন্স ছাড়া দুই পাইলটকে প্রত্যাহার করল এয়ার ইন্ডিয়া Nov 02, 2025
img
ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলে ডাক পাচ্ছেন জাওয়াদ আবরার! Nov 02, 2025
img
দোষী অথবা নির্দোষ এর বাইরে ইনুর কোনও বক্তব্য আমলে নেয়ার সুযোগ নেই: চিফ প্রসিকিউটর Nov 02, 2025
img
‘স্বরাষ্ট্র-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলে জাকির নায়েক আসবেন’ Nov 02, 2025
img
বাংলাদেশের শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে: মির্জা ফখরুল Nov 02, 2025
img
পুলিশি বাধার মুখে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের লংমার্চ Nov 02, 2025
img
ফেরত যাবার আগেই ৪৫ বাংলাদেশি ভারতে গ্রেপ্তার Nov 02, 2025
img
দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে : মির্জা ফখরুল Nov 02, 2025
img
মাদ্রাসা শিক্ষকদের দাবি নিয়ে টালবাহানা করা চলবে না: জামায়াত Nov 02, 2025
img
এআই-র আগমনে হলিউডে স্ক্রিপ্ট রিডারদের কাজের শঙ্কা Nov 02, 2025
img
আমি যেহেতু ঢাকার সন্তান, এখান থেকেই হয়তো লড়তে হবে: নাহিদ Nov 02, 2025
img
ফের জামায়াত আমির নির্বাচিত হলেন শফিকুর রহমান Nov 02, 2025
img
‘আল্লাহর পর বিচার নিষ্পত্তির প্রতিনিধি আপনি’- ট্রাইব্যুনালকে ইনু Nov 02, 2025
img
নভেম্বরের মধ্যেই সব নতুন বই পেয়ে যাবো: গণশিক্ষা উপদেষ্টা Nov 02, 2025
img
জানুয়ারি থেকে সব সরকারি ভবন হবে গ্রিন বিল্ডিং: রিজওয়ানা হাসান Nov 02, 2025
img
১৯ বছর পর ময়নুলকে দেশে ফিরিয়ে আনলো সেনাবাহিনী Nov 02, 2025
img
জাতীয় অনৈক্য সেদিনই তৈরি হয়েছে, যেদিন জুলাই সনদে স্বাক্ষর হয়েছিল: নাহিদ Nov 02, 2025