আমরা এখনও দখল-দাপট ও অপরাধের মধ্যেই ডুবে আছি : জিল্লুর রহমান

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনীতির পট পরিবর্তন হলেও সবকিছুই পুরনো ধাঁচেই রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, একটা দলের দমন-পীড়নের সংস্কৃতি শেষ হতে না হতেই অন্য আরেকটি দলের ভেতরেই শুরু হয়ে গেছে দখল, চাঁদাবাজি, অস্ত্রের মহড়া, কমিটি নিয়ে সংঘর্ষ। এমনকি ধর্ষণের অভিযোগ পর্যন্তও উঠেছে। আমরা এখনো পুরনো দখল, পুরনো দাপট আর পুরনো অপরাধের মধ্যেই ডুবে আছি।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে এসব কথা বলেন তিনি।

জিল্লুর রহমান বলেন, বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের বহু নেতাকর্মী দলের নাম ভাঙিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে— চাঁদাবাজির, কেউ মারপিটে জড়াচ্ছেন। কেউ আবার কমিটি নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন।

এসব ঘটনা আবারও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে। ফলে পুরো দলকে বিব্রত হতে হচ্ছে। অথচ এর মধ্যে বেশিরভাগ ঘটনাতেই যেসব ব্যক্তি জড়িত, তারা অনেকেই নব্য বিএনপি বা হাইব্রিড নামধারী বলে পরিচিত। বিএনপির হাইকমান্ড বলছে— তারা জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে।

তারা অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। বহুজনকে বহিষ্কার বা শোকজ করা হয়েছে। এমনকি নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা বলছে— ভিন্ন কথা। যাদের বহিষ্কার করা হচ্ছে, কিছুদিন পর তাদের বহিষ্কারা আদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।

তারা আবার পদে ফিরছেন। দলে দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ বলছেন- বহিষ্কার বা শোকজ আসলে আই ওয়াশ। জনগণকে দেখাবার জন্য কাগজে কলমে শুদ্ধি অভিযান চলছে। বাস্তবে সব আগের মতোই। এই অবস্থায় দলীয় শৃঙ্খলা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিএনপি কর্মীরা এখন বলছেন- দলে থাকার জন্য ত্যাগ নয়। দরকার দখলদারিত্বের সক্ষমতা। যে যত ভয়ঙ্কর, যে যত লোক জমায়েত করতে পারে, সে দলের ভেতরে তত বেশি গুরুত্ব পান। সেই সঙ্গে আছে অর্থের ভূমিকাও। দলীয় পদপদবি, বাণিজ্য, প্রার্থিতা নিয়ে দর কষাকষি আর দলের ভেতরকার তোলাবাজি সংস্কৃতি- এসব মিলিয়ে বিএনপি তার কাঙ্ক্ষিত বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে বসেছে।

এনসিপির নেতাদের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এনসিপিতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। মাত্র চার মাসেই চার কেন্দ্রীয় নেতাকে শোকজ করতে হয়েছে। একজনকে সাময়িক অব্যাহতি দিতে হয়েছে। শৃঙ্খলার নামে তদন্ত চলছে। ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে। তবে কোনো চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেই। বরং ভুল স্বীকার করলেই যেন সব মাফ। কিছু কিছু ঘটনায় এনসিপির নেতাদের ভূমিকা এমন ছিল যে, তারা অপরাধীর পক্ষ নিয়ে মুসলেকা দিয়েছেন। আবার দলীয় ফেসবুক পোস্টে সমর্থনও জানিয়েছেন। এটি যেমন দ্বিচারিতা, তেমনি দুর্বলতা। এখানেই এসে প্রশ্নটা আরো বড় হয়ে দাঁড়ায়। 

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঝিনাইদহে পিকআপ ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২ জনের Jul 08, 2025
img
‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চেয়ে সাংবাদিকদের থামিয়ে দেয়া সভ্য রাজনীতি নয়’ Jul 08, 2025
img
ভোলায় যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ আ. লীগের তিন নেতা আটক Jul 08, 2025
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে যা বললেন হাসনাত Jul 08, 2025
img
পরপর ২ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ Jul 08, 2025
ল্ক ইস্যুতে বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের জন্য আলোচনার সুযোগ রাখলেন ট্রাম্প Jul 08, 2025
রাতের আঁধারে জোর করে যেভাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন জিএম কাদের! Jul 08, 2025
‘ফিলিস্তিন কখনোই স্বাধীন হবে না’—নেতানিয়াহু Jul 08, 2025
img
১৪৬ কোটি টাকায় ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার Jul 08, 2025
img
ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের ২ নেতা গ্রেফতার Jul 08, 2025
মহররম মাসের প্রচলিত কুসংস্কার Jul 08, 2025
জাতীয় দলে ফিরলেন সাইফুদ্দিন, এবার কি নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন Jul 08, 2025
img
গাজাবাসীকে জোর করে সরানো নিয়ে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর আলাপ Jul 08, 2025
img
এবার অভিনেত্রী নয়নতারার বিরুদ্ধে ৫ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা Jul 08, 2025
img
২ অক্টোবর থেকে সচিবালয়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ Jul 08, 2025
img
৪ মামলায় গ্রেফতার আসাদুজ্জামান নূর Jul 08, 2025
img
গানের জগতে ঝড় তুলেছে ‘গুলবাহার’, মুগ্ধ সংগীতপ্রেমীরা Jul 08, 2025
img
সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে হবে : ফয়জুল করীম Jul 08, 2025
img
মহাদেবের ভক্ত আদাহ, তাই ভয় নেই সুশান্তের ফ্ল্যাটে থাকতে Jul 08, 2025
img
ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরানোর পরিকল্পনা ট্রাম্পের Jul 08, 2025