টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলার ছয় উপজেলা পানির নিচে

টানা ২৪ ঘণ্টার ভারি বর্ষণে আবারও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর জেলা শহরসহ একাধিক উপজেলা। জেলা সদর মাইজদী, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, চাটখিল, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচরের বহু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে যানবাহনের চালকরাও পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও কোমরসমান পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ পরিস্থিতি।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আরও ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশেষ করে জেলা শহর মাইজদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মৎস্য অফিস, জেলা খানা সড়ক, পাঁচ রাস্তার মোড়, পৌর বাজারসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তাগুলো পানিতে ডুবে গেছে। অনেক বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে, ছোট শিশুদের স্কুলে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ার খবরও পাওয়া গেছে।

সকাল থেকেই রিকশা-অটোরিকশা না পেয়ে বহু মানুষ অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে হিমশিম খেয়েছেন। অনেকে বাসা থেকে বের হতে পারেননি। খোলা হয়নি অনেক দোকানপাটও।

জেলা শহরের বাসিন্দা আবু সাইদ নোমান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থার ঘাটতি রয়েছে বহুদিন ধরে। সামান্য বৃষ্টি হলেই বছরের পর বছর একই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।

সুবর্ণচরের বাসিন্দা মাইন উদ্দিন বলেন, খাল খনন না করাই এই পরিস্থিতির মূল কারণ। প্রতি বছর বর্ষায় একই অবস্থা দেখতে হয়। দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি বলেই সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা হয়নি। কিছু উপ-সড়কে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

অন্যদিকে পৌর প্রশাসক জালাল উদ্দীন জানান, পানি নিষ্কাশনের কাজ চলমান রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সাধারণ মানুষ বলছেন, এটি নতুন কিছু নয়। প্রতিবছর বর্ষা এলেই নোয়াখালীর নাগরিকদের এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু দুর্ভোগ কমাতে কোনো টেকসই উদ্যোগ আজও দৃশ্যমান নয়।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ১৪টি স্থানে ভাঙন, ডুবে যাচ্ছে জনপদ Jul 09, 2025
img
সকালে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন আরও ১৬২ জন Jul 09, 2025
img
অবরুদ্ধ ব্যাংক হিসাবগুলো ডিজিএফআইয়ের : দুদক Jul 09, 2025
img
ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল, সূচি প্রকাশ Jul 09, 2025
img
কুষ্টিয়ায় ঘরে ঘরে আবরার ফাহাদ জন্ম নেবে : নুসরাত তাবাসসুম Jul 09, 2025
img
যাদের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা নেই, তারাই পিআর চায় : আমিনুল হক Jul 09, 2025
img
এসএসসি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে Jul 09, 2025
img
অর্থবছরের প্রথম সপ্তাহে দেশে রেমিট্যান্স এলো ৬৬ কোটি ডলার Jul 09, 2025
img
লিটন দাসের বাদ পড়া প্রসঙ্গে যা বললেন মিরাজ Jul 09, 2025
img
সকালের মধ্যে দেশের সাত জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের শঙ্কা Jul 09, 2025
img
হৃদয়ের ওপর চাপটা দিতে চাইনি : মিরাজ Jul 09, 2025
img
নরসিংদীতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে বিএনপি নেতা বহিষ্কার Jul 09, 2025
img
বাহাত্তরের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষাকে নস্যাৎ করেছিল : নাহিদ Jul 09, 2025
img
হবিগঞ্জ সীমান্তে ৮ বাংলাদেশিকে পুশ-ইন বিএসএফের Jul 09, 2025
img
ফেনীর দুই উপজেলায় ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত, খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম Jul 09, 2025
img
নারায়ণগঞ্জে অনুমোদনহীন ১৮৩৬ লিটার জ্বালানি তেল জব্দ Jul 09, 2025
img
আমাদের দলটা জুনিয়র এখনও, আমরা পজিটিভ থাকার চেষ্টা করছি : হারের পরে মিরাজ Jul 08, 2025
img
ঢাকা বিমানবন্দরে ৮৯৬ গ্রাম সোনাসহ আটক ২ Jul 08, 2025
img
পন্তকে ভারতের শহীদ আফ্রিদি বললেন সাবেক অধিনায়ক মুশতাক মোহাম্মদ Jul 08, 2025
img
সাংবাদিকদের ধমক দেবেন, এটা সভ্য রাজনীতির কথা নয় : ডা. জাহিদ Jul 08, 2025