যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত নতুন ৫০ শতাংশ শুল্কের কারণে তামা রপ্তানিতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে বিশ্ব বাজার। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রগামী হাজার হাজার টন তামা এখন বিকল্প গন্তব্য খুঁজছে। ফলে বড় রপ্তানিকারক দেশগুলো এখন তামা পাঠাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা চীনকে লক্ষ্য করে। খবর রয়টার্স
ট্রাম্প বুধবার (৯ জুলাই) রাতে ঘোষণা দেন, দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে ১ আগস্ট থেকে তামাসহ গুরুত্বপূর্ণ শিল্পপণ্যে শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, কোন কোন তামা পণ্য এতে পড়বে বা কোনো ব্যতিক্রম থাকবে কিনা।
চীনা ব্যবসায়ীরা বলছেন, জুনের শেষদিক থেকে বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে যে হারে অফার আসছে, তা গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এক চীনা ব্যবসায়ীর ভাষায়, ‘এই মুহূর্তে বাজারে অফারের জোয়ার বইছে।’
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে চীনের এক ক্রেতাকে ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন তামার চালান পাঠানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যার ডেলিভারি নির্ধারিত জুলাইয়ের শেষ অথবা আগস্টের শুরুতে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে তামা রপ্তানির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ট্রাম্পের হঠাৎ ঘোষণায় তারা বাধ্য হয়েছেন নতুন বাজার খুঁজতে। এদিকে Benchmark Mineral Intelligence-এর বিশ্লেষক আলবার্ট ম্যাকেঞ্জি বলেন, চিলির তামা যদি ইউরোপের দিকে যেতে শুরু করে, তাহলে এশিয়াসহ অন্যান্য বাজারেও এর প্রভাব পড়বে।
এই পরিস্থিতিতে ইয়াংশান কপার প্রিমিয়াম (চীনা ক্রেতারা বিদেশি তামার জন্য যে অতিরিক্ত মূল্য দিতে প্রস্তুত) বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬২ ডলার। সিঙ্গাপুরভিত্তিক একজন ট্রেডার জানান, অনেক বড় ট্রেডিং হাউজ এখন যুক্তরাষ্ট্রের বদলে চীনকে তাদের রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করছে।
এদিকে, সাংহাই ফিউচার এক্সচেঞ্জে তামার দাম টানা পাঁচদিন ধরে কমছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) তামার দাম প্রতি টন ৭৮ হাজার ৬০০ ইউয়ানে নেমে এসেছে, যা গত ২৩ জুনের পর সর্বনিম্ন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বাজার অস্থিরতা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে, বিশেষ করে যদি ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক সংক্রান্ত বিস্তারিত ঘোষণা না দেয়।
ইউটি/টিএ