যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে ২০২৪ সালের নির্বাচনি জনসভায় হওয়া হামলার ঘটনায় দায়িত্বে থাকা ছয় সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টকে শাস্তি দিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিবৃতির মাধ্যমে তাদের বরখাস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ওই ছয় কর্মকর্তার প্রত্যেককে ১০ থেকে ৪২ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তাদের নাম এবং বরখাস্তের নির্দিষ্ট কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
২০২৪ সালের ১৩ জুলাই, পেনসিলভেইনিয়ার বাটলার শহরে এক নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সময়, কাছের একটি ভবনের ছাদ থেকে এক বন্দুকধারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। হামলায় ট্রাম্প আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান তার এক সমর্থক। তবে গুলি চালানো ওই বন্দুকধারীকে নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলেই গুলি করে হত্যা করে।
ঘটনার পরপরই সিক্রেট সার্ভিসের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। তদন্তের আওতায় আসে পুরো সিক্রেট সার্ভিস, যার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার তৎকালীন পরিচালক পদত্যাগ করেন। সম্প্রতি সেই তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঘটনা নিয়ে ফক্স নিউজের ‘মাই ভিউ উইথ লারা ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ওই ছাদে যদি একজন সিক্রেট সার্ভিস এজেন্ট থাকত, তাহলে এই ঘটনা কখনোই ঘটত না। স্থানীয় পুলিশকে দায়িত্ব না দেওয়াটাও ছিল একটা বড় ভুল
বর্তমানে সিক্রেট সার্ভিসের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শন কারান এক বিবৃতিতে জানান, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে লক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা সংস্কার শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসের নজরদারি কমিটি থেকে প্রাপ্ত ৪৬টি সুপারিশের মধ্যে ২১টি ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন হয়েছে, ১৬টি প্রক্রিয়াধীন এবং ৯টি সংস্থার এখতিয়ারের বাইরে।
এমনকি বাটলারের ঘটনায় মাত্র দুই মাসের মাথায়, ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে ট্রাম্পের এক গলফ ক্লাবে তার ওপর আরও একটি হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনার অভিযোগ ওঠে।
সিক্রেট সার্ভিস জানায়, ওই সময় এক বন্দুকধারী ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন, যিনি ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ঘটনাটির পর গলফ ক্লাবসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত স্থানে নিরাপত্তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাবেক প্রেসিডেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রে বরাবরই সিক্রেট সার্ভিস অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে বারবার নিরাপত্তা হানার মতো ঘটনা, বিশেষ করে নির্বাচনী বছর ঘিরে, সংস্থার সক্ষমতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও।
সূত্র: আল-জাজিরা
আরআর/টিকে