ভারতের বিপক্ষে চলমান লর্ডস টেস্ট দিয়ে ৪ বছর পর ফরম্যাটটিতে খেলতে নেমেছেন ইংল্যান্ডের গতিতারকা জোফরা আর্চার। নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে রীতিমতো গতির ঝড় তুলছেন ৩০ বছর বয়সী এই ডানহাতি পেসার। বলা হচ্ছে ভারতের বিপক্ষে তার করা ৭৩তম ওভারটি টেস্ট ক্যারিয়ারেরই সবচেয়ে দ্রুতগতির ওভার। ওই ওভারে তার ৬টি ডেলিভারির গড় গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার।
ভারত-ইংল্যান্ডের চলমান টেস্টের প্রথম ইনিংসই ইতিহাসের পাতায় উঠেছে। দুই দলই সমান ৩৮৭ রান তুলেছে নিজেদের স্কোরবোর্ডে। ২০১৫ সালের পর এই প্রথম টেস্টে এমন দৃশ্য দেখা গেল। যদিও সবমিলিয়ে এমন নজির রয়েছে নয়টি। প্রথম ইনিংসে দুই দলেরই সমান ৩৮৭ রান পঞ্চম সর্বোচ্চ। এ ছাড়া ম্যাচটিতে ব্যাট হাতে বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়েছেন ভারতীয় দুই তারকা ব্যাটার লোকেশ রাহুল ও ঋষভ পান্ত।
এক নজরে আর্চার-রাহুল-পান্তের যত রেকর্ড
১৪৮
আর্চারের ব্যক্তিগত ১৮তম এবং ভারতীয় ইনিংসের ৭৩তম ওভার শেষেই পুরো লর্ডসের গ্যালারি সমস্বরে করতালিতে মেতে ওঠে। ওভারটিতে ১৪৮ কিলো. গড়ে গতি দিয়েছেন এই ইংলিশ তারকা। প্রতিটি ডেলিভারি করেছেন যথাক্রমে— ১৫০, ১৫০, ১৪৯, ১৪৬, ১৪৮ ও ১৪৮ কিলো গতিতে। যা আর্চারের টেস্ট ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ গতির ওভার বলে নিজেদের এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে জানিয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট।
এর আগে ৭১তম ওভারেও গতির ঝড় তুলেছিলেন আর্চার। সেই ওভারে তিনি ডেলিভারি ছাড়েন– ১৫০, ১৪৭, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯ ও ১৫০ কিলো. গতিতে। মধ্যাহ্ন বিরতির পর টানা চার ওভারেই এভাবে তিনি ভারতীয় ব্যাটারদের ওপর তোপ দেগেছেন। টেস্টে প্রত্যাবর্তনের পর লর্ডস টেস্টের প্রথম ইনিংসে সবমিলিয়ে ২৩.২ ওভার করেছেন আর্চার। যেখানে ৫২ রান খরচায় তার শিকার ২ উইকেট।
৯
১৭৭ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলেছেন রাহুল। যা ভারতীয় এই ব্যাটারের দশম টেস্ট সেঞ্চুরি। এর মধ্যে ৯টিই তিনি করেছেন বিদেশের মাটিতে। নিজের প্রথম ১০ সেঞ্চুরির নয়টিই বিদেশের মাটিতে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। একই কীর্তি আছে কেন বেরিংটন ও মহিন্দর অমরনাথের। টেস্ট ক্যারিয়ারে রাহুল ইংল্যান্ডের মাটিতে ৪, দক্ষিণ আফ্রিকায় ২ এবং অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে একটি করে সেঞ্চুরি করেছেন।
৪/২
এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের মাটিতে চার টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন লোকেশ রাহুল। যা দেশটিতে সফরকারী ব্যাটার হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ ইংল্যান্ডে সর্বোচ্চ পাঁচটি টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। এ ছাড়া লর্ডসে একাধিক টেস্টে সেঞ্চুরি করা ব্যাটারদের তালিকায়ও রাহুল চতুর্থ। এর আগে ঐতিহাসিক ভেন্যুটিতে ন্যূনতম দুটি করে সেঞ্চুরি করেন বিল ব্রাউন, গর্ডন গ্রিনিজ ও গ্রায়েম স্মিথ।
এ ছাড়া ২০১৮ সাল থেকে ইংল্যান্ডে ওপেনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ সেঞ্চুরির রেকর্ডটিও এখন রাহুলের দখলে। অথচ একই সময়ে স্বাগতিক ইংলিশ ওপেনার বেন ডাকেট ৩, ররি বার্নস ২ ও জ্যাক ক্রাউলি নিজেদের মাঠে ২টি সেঞ্চুরি করেন। এক্ষেত্রে সবার চেয়ে কম ইনিংসও খেলেছেন রাহুল (২১)। বাকিরা ২৮ বা তার বেশি টেস্ট ইনিংস খেলেছেন।
১০০+
রাহুল ও পান্ত মিলে লর্ডস টেস্টে ১১৫ রানের জুটি গড়েছেন। এ নিয়ে ইংল্যান্ডে খেলা চার ইনিংসের মধ্যে তিন ইনিংসেই এই জুটিতে ১০০+ রানের জুটি হয়েছে। যা ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ। রাহুল-পান্ত ২০১৮ সালে ওভালে ২০৪ এবং চলমান সিরিজে লিডস টেস্টের এক ইনিংসে ১৯৫ রানের জুটি গড়েন।
৫০+/৮
ঘরের বাইরে নির্দিষ্ট দেশের মাটিতে কোনো উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে সর্বোচ্চ ৮ টেস্টে হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন পান্ত। একই ভূমিতে (ইংল্যান্ড) মহেন্দ্র সিং ধোনি ৮ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার জন ওয়েট ৭টি হাফসেঞ্চুরি করেন।
৩৫
এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ৩৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ঋষভ পান্ত। যা তাদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া ভিভ রিচার্ড ৩৪, টিম সাউদি ৩০, যশস্বী জয়সওয়াল ২৭ ও শুভমান গিল ইংলিশদের বিপক্ষে ফরম্যাটটিতে ২৬টি ছয় হাঁকান।
৩৪
চলমান সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৩৪টি ছয় মেরেছে ভারতীয় ব্যাটাররা। যা বিদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজে কোনো দলের সর্বোচ্চ ছয়। যদিও ভারত-ইংল্যান্ডের এই সিরিজে এখনও দুটি টেস্ট এবং আরও এক ইনিংস বাকি। এ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতের মাটিতে ৫ ম্যাচ সিরিজে ৩২ এবং নিউজিল্যান্ড পাকিস্তানের মাটিতে ৩ ম্যাচ সিরিজে ৩২টি ছয় হাঁকায়।
এফপি/ টিকে