বরগুনায় এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি ডেঙ্গুর পরিস্থিতি। জেলায় প্রতিদিনই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন প্রায় শতাধিক রোগী। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে জেলায় আরও অন্তত ২৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বরগুনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই দেড় শতাধিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সবমিলিয়ে হাসপাতালটিতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ জন ভর্তি রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। অপরদিকে সদর উপজেলার পর বিভিন্ন উপজেলার মধ্যে পাথরঘাটায় বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪৫ জন। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে আরো ভর্তি রয়েছেন ১৮ জন। এর মধ্যে বামনায় ও তালতলীতে ৪ জন করে মোট ৮ জন, পাথরঘাটায় ৯ এবং আমতলীতে ১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১২৪ জন রোগী। জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল আরো আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ৫১ জন।
এবছর এখন পর্যন্ত বরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মোট ৪ হাজার ২৩ জন রোগীর মধ্যে শুধু জেনারেল হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ হাজার ৪৮৭ জন। এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। তবে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে জেলার আরও অন্তত ২৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর অবস্থান থেকে পাথরঘাটা উপজেলা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে এখন পর্যন্ত ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৩২ জন। এছাড়াও আমতলীতে ৪৯, বেতাগী ৪০, বামনায় ১৩৭ এবং তালতলীতে ৭৮ জন আক্রান্ত রোগী এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে জেলায় আক্রান্ত সব রোগীর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৪৮ জন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, আমাদের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেলের হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো চিকিৎসা সেবায় সক্ষমতা অর্জন করেছে। আর একারণেই আক্রান্ত রোগীর বেশি অংশ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে কিছু জটিলতা নিয়ে যারা ভর্তি হয় তাদের চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা শুধু বরগুনা জেনারেল হাসপাতালই নয় বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালেই নেই।
তবে আমাদের ওই জটিল রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য বরগুনা হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সক্ষমতা যদি আরেকটু বাড়ানো যায়, বিশেষ করে আইসিইউ সুযোগ সুবিধা যুক্ত হয় তাহলে আমরা জটিল রোগীদেরও চিকিৎসা দিতে পারব।
এমআর/টিকে